আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হারিকেন ম্যাথিউকে বলা হচ্ছিল এক দশকের মধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়াবহ হারিকেন। হাইতিতে তার প্রমাণ রেখে গেল ম্যাথিউ। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের হাইতিতে আঘাত হানা এই হারিকেনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৩তে। 

হাইতির সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বিবিসি। নিহতদের মধ্যে দেশটির দক্ষিণের শহর রশে-এ-বাতিয়ুতেই রয়েছেন প্রায় ৫০ জন।

দেশটির প্রধান শহর জেরেমিনের ৮০ শতাংশ ভবনই বিধ্বস্ত হয়েছে। সুদ রাজ্যের ৩০ হাজার ঘড়বাড়ি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দিকে এগোতে থাকা ম্যাথিউ এখন চার মাত্রার হারিকেন; ভয়াবহতার দিক থেকে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার অবশ্য এটিকে তিন মাত্রার বলা হয়েছিল।

হাইতির সরকারি হিসাবে এর আগে বলা হয়েছিল ১শর কিছু বেশি মানুষ মারা গেছেন।

হাইতি, কিউবা এবং ডোমিনিক্যান রিপাবলিকের উপর তাণ্ডব চালানোর পর বাহামাসেও আঘাত হেনেছে ক্যারিবীয় অঞ্চলের এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হারিকেন ম্যাথিউ।

বাহাসামে গাছ উপড়ে পড়ার ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেলেও এখনো পর্যন্ত কারো নিহত হওয়ার খবর নেই।

হাইতিতে নিহতদের বেশিরভাগই দক্ষিণ উপকূলের; জীবিকার জন্য যারা মাছ ধরার উপর নির্ভর করতেন। সেখানে মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন মূলত গাছের নিচে চাপা পড়ে, উড়ে আসা কোনো কিছুর আঘাতে বা নদীর পানিতে ডুবে।

বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার। গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু ভেঙে পড়ায় দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন এনজিও জানিয়েছে, অনেক জায়গায় এখন মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, বিদ্যুৎ নেই, পর্যাপ্ত খাদ্য নেই।

জাতিসংঘের এক হিসেবে দেশটিতে এখন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা প্রয়োজন। আমেরিকান রেড ক্রসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, মোবাইল নেটওয়ার্কের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

পৃথিবীর দরিদ্র দেশগুলোর একটি হলো হাইতি। দেশটির অধিবাসীদের অনেকেই বন্যাপ্রবণ এলাকায় কাঁচা বাড়িতে থাকেন।

হাইতির প্রতিবেশি দেশ ডোমিনিক্যান রিপাবলিকে নিহত হয়েছেন চারজন।

এরআগে ২০১০ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাইতিতে লক্ষাধিক মানুষ নিহত হন।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ০৭, ২০১৬)