স্টাফ রিপোর্টার :জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সুলতানা বেগম কচি (২৪)-কে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।

র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার লুৎফুল কবির এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, নব্য জেএমবি-র সক্রিয় সদস্য সুলতানা বেগম কচিকে নরসিংদীর গোরাদিয়া হাইস্কুলের পেছনে তার বাবার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আমরা পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়েছি। সে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছে। সে কিভাবে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হলো, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তাও আমরা তদন্ত করে দেখছি।

তিনি আরও বলেন, কচিকে গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইলে আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। সে বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খন্দকার লুৎফুল কবির জানান, গত ১৪ ও ১৫ আগস্ট গাজীপুরের সাইনবোর্ড, রাজধানীর মগবাজার ও মিরপুর এলাকা থেকে চার নারী জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই চারজনের মধ্যে জেএমবি-র নারী বিভাগের উপদেষ্টা আকলিমা রহমান, সদস্য মৌ ও মেঘলা বেসরকারি মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। আরেক সদস্য ঐশী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকেই এমবিবিএস পাস করে। মূলত ঐশীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই সুলতানা বেগম কচিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-৪-এর অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, কচি ইডেন মহিলা কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের মাস্টার্সের ছাত্রী। সে ইডেনের হলে থাকত। র‌্যাবের হাতে আগে গ্রেফতার হওয়া ঐশীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। ঐশীর মাধ্যমেই সে নব্য জেএমবিতে যোগদান করে। তারা একসঙ্গে ধানমন্ডি ৬ নম্বর সড়কের একটি বাসার নীচতলায় ইসলামীক আলোচনায় অংশ নিত। সেখানে আরও অনেক নারী অংশ নিত, তবে তাদের সবাই জঙ্গি না। ঐশীসহ চার জেএমবি সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পর কচি ঢাকা থেকে গ্রামে চলে যায়। নরসিংদী সদরের গোরাদিয়া হাইস্কুলের পেছনেই তাদের বাসা। তার বাবা সাবেক কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি তার বিয়েও হয়েছে। তবে গ্রেফতারের সময় সে বাবার বাড়িতেই ছিল। কচির জঙ্গি সম্পৃক্ততায় তার পরিবারও অবাক হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, জেএমবির চার নারী জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ার পর আমরা তাদের মোবাইল ফোন ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাই। ঐশীর ফেসবুকের ইনবক্সে কচির ও তার দীর্ঘ চ্যাটিংয়ের রেকর্ড পাওয়া যায়। তারা জিহাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ইসলামি রাষ্ট্র বানানোর পরিকল্পনা করছিল। চ্যাটিংয়ের এই কথোপকথোনের সূত্র ধরেই কচিকে খুঁজে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই জঙ্গিবাদের প্রাথমিক পযায়ে ছিল।



(ওএস/এএস/অক্টোবর ১৮, ২০১৬)