মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : সংবাদ প্রকাশের জের ধরে যায়যায়দিন এবং জিটিভির মৌলভীবাজার প্রতিনিধি সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে স্থানীয় সচেতন সমাজে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তীব্র নিন্দার ঝড়!

জানা যায় সম্প্রতি শ্রীমঙ্গলের মাদক, জুয়া ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে দৈনিক যায়যায়দিন ও অনলাইন নিউজপোর্টাল ই নিউজ৭১.কমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ। প্রকাশিত সংবাদগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড দেয়ার পর শত শত শেয়ার হয়ে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পরে। একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় জুয়া, আটক হন কিছু মাদক ব্যবসায়ী। সংবাদ প্রকাশের কিছুদিন পরেই সাংবাদিক হৃদয় ফেইসবুক বার্তায় আশংকা প্রকাশ করে একটি পোস্টে জানিয়েছিলেন, সংবাদ প্রকাশে ক্ষতিগ্রস্থ একটি বিশেষ মহল আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করছে। এই বার্তার কিছু দিন পরেই হৃদয় দেবনাথসহ দুইজনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন জনৈক দুলাল মিয়া নামে এক ব্যক্তি।

মামলার বিবরণীতে তিনি অভিযোগ করেন সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ তার কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন চাঁদা না পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রাণে হত্যার চেষ্টা করেন। এদিকে মুঠোফোনে মামলার বাদী দুলাল মিয়া জানান, হৃদয় দেবনাথ নামে কাউকে তিনি চিনেন না এমনকি কোনোদিন দেখেননি। হৃদয় নামে কোনো লোকের নামে তিনি মামলা ও করেন নি। এমনকি এই নাম তার মামলায় কি করে আসলো তা ও জানেন না তিনি। এই ভয়েস রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড দেওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় মামলার বাদী দুলাল মিয়া একজন হতদরিদ্র খেটে খাওয়া কৃষক। সামান্য ভিটে মাটি যেটি রয়েছে তা নিয়ে আপন বোন ভাগিনাদের সাথে সমস্যা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয় অনেকেই জানান দুলাল মিয়াকে ব্যবহার করে হৃদয় দেবনাথকে ফাঁসিয়েছে একটি বিশেষ মহল।

কিছুদিন যেতে না যেতেই রুমি বেগম নামে এক মহিলা সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথের নামে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আর একটি মামলা দায়ের করেন।

সর্বশেষ সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথকে মিথ্যা মামলায় হয়রানী না করার জন্য বাংলাদেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক প্রবীর সিকদার ফেসবুকে এক বার্তায় এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে লেখেন, তরুণ সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথের উপর পরিকল্পিতভাবে করা সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার না করলে তিনি নিজে মৌলভীবাজারে এসে অনশন কর্মসূচি পালন করবেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এব্যাপারে সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের শরণাপন্ন হয়েছেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল জানিয়েছেন, আমি বিষয়টি খুব সিরিয়াসলি দেখছি এবং তদন্তের জন্য দিয়েছি। যদি মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিককে হয়রানি করা হয়ে থাকে তাহলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা।

স্থানীয়রা জানান, জুয়া মাদকসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সংবাদ প্রকাশে ক্ষতিগ্রস্থ একটি বিশেষ মহল প্রতিশোধ নিতে সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে।

তরুণ সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথের উপর দায়ের করা মামলার তীব্ৰ নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মৌলভীবাজার জেলার সকল সাংবাদিক সমাজসহ স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।

(ওএস/অ/নভেম্বর ০৪, ২০১৬)