নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভান্ডারগ্রামের দামারপাড়ায় ১শ’ ১টি বাড়িতে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রতিটি সংযোগের জন্য ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃক অনুমোদিত ইলেকট্রিশিয়ানরা নিজেদের দায়িত্বে পাওয়া এলাকায় কতিপয় ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের কাছ থেকে দফায় দফায় এসব অর্থ আদায় করছে।

স্থানীয়রা জানান, বর্তমান সরকার যেখানে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিনা মূল্যে ও বিনা খরচে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার অঙ্গিকারাবদ্ধ, অথচ সেখানে কতিপয় অসাধু দালাল শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গ্রামের এই সব অসহায় মানুষদেরকে বিভিন্ন অজুহাতে জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর সেই সঙ্গে প্রতারিত হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। অপরদিকে রাণীনগর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই গ্রামে গ্রাহকদের মাঝে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কাজ এখনো প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। তাই অফিসিয়ালী টাকা নেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার পারইল ইউপির ভান্ডার গ্রামের দামারপাড়ায় ১শ’ ১টি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের নামে স্থানীয় প্রভাবশালী আবুল কালাম ও তার সহযোগি সাবেক ইউপি মেম্বর গোলাম মোস্তফা প্রায় ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রায় ১বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত ওই গ্রামে তারা বিদ্যুৎ পৌছে দিতে পারেনি। ফলে গ্রামবাসীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আবার অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, গোলাম মোস্তফা ও আবুল কালাম গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে টাকা তুলে গোলাম মোস্তফার নির্বাচনে ব্যয় করেছেন। সে কারণে টাকাগুলো বিদ্যুৎ অফিসে না পৌঁছায় অদ্যাবধি এই গ্রাম অন্ধকারে রয়েছে।

রাণীনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মুনতাসিম বিল্লাহ জানান, ওই গ্রামে সবেমাত্র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সরকারের চুক্তি মোতাবেক লাইন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেছে। সংযোগের বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। বিদ্যুৎ বিষয়ে সরাসরি অফিসে যোগাযোগ করার জন্য মাইকে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে সচেতনতা মুলক প্রচার-প্রচারনা চালিয়েছি। তবুও কোন দালাল শ্রেণির লোক যদি এরকম প্রতারণা করে থাকে তাহলে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

নওগাঁ জেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জিএম এনামুল হক প্রামাণিক জানান, যেখানে বর্তমান সরকার বিনা খরচে প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার জন্য অঙ্গিকারাবদ্ধ, সেখানে কোন ব্যক্তি বিদ্যুৎ সংযোগের নাম বলে একটি টাকাও নেয়ার কোন অধিকার রাখে না। যদি কোন অসাধু দালাল শ্রেণির ব্যক্তিরা বিদ্যুৎ বিষয়ের নাম ভেঙ্গে কোন প্রকারের অর্থ নিয়ে থাকে, তাহলে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(বিএম/এএস/নভেম্বর ১৮, ২০১৬)