নওগাঁ প্রতিনিধি : হেমন্তের শেষের দিকে এসেই নওগাঁ জেরার নদী-নালা, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে গেছে। খাল-বিলের তলায় অবশিষ্ট কাদা-পানিতে হাতিয়ে মাছ ধরার প্রথা সেই আবহমান কাল থেকেই চলে আসছে। যদিও এখন আর আগের মত দেশীয় প্রজাতির মাছ মিলে না। তার পরেও মাছ ধরার নেশা এখনো রয়ে গেছে প্রতিটি বাঙ্গালীর মনে। দূর-দূরান্ত থেকে মাছ ধরতে আসা মানুষগুলো সারাদিন কাদা-পানি ঘেঁটে যে দু’চারটি পুঁটি, শাটি, চোপড়া, গুচি পান, তা নিয়ের তাদের খুশির অন্ত থাকেনা। গ্রামীন নারী ও শিশুরাই এভাবে মাছ ধরতে বেশী আগ্রহী।

মঙ্গলবার নওগাঁ-রাজশাহী মহা-সড়কের মান্দা উপজেলার মীরপুর গ্রামে সড়ক সংলগ্ন খালের স্বল্প পানিতে চোখে পড়লো ৮/৯ জন আদিবাসী রমনীকে। তারা হাঁটু পানিতে নেমে বড় বড় কচুরি পানা ও কাদা সরিয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরার চেষ্টা করছে। ভর দুপুরে তাদের কষ্ট করে মাছ ধরার দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী করতেই সাবলীল ভঙ্গিতে হেঁসে উঠলো ওরা। সাংবাদিক জেনে ওরা বললো, ভাল করে ছবি নেন বাবু।

কথা হলো, সাথী ওড়াও, পঞ্চমী ওড়াও, সনিয়া ওড়াও, ভগবতী ওড়াও, সরস্বতী ওড়াও ও ভারতঅ ওড়াওয়ের সঙ্গে। ওদের সকলের বাড়ি ওই খাল থেকে ৫ কিঃমিঃ উত্তরে মহাদেবপুর উপজেলার পাঁঠাকাটা গ্রামে।

ভগবতী জানায়, এখানে কাদা ঘেঁটে তারা শাটি, চোপড়া, কাঁকড়া ছাড়া অন্য কোন মাছ পাচ্ছেনা। প্রত্যেকেই মাছ পেয়েছে দু’চারটি করে। মাছ আর কাঁকড়া মিলে কোনভাবে তাদের রাতের খাবারটা চলবে বলে উল্লেখ করে তারা।

তারা জানালো, শুধু মাছ ধরা নয় বাবু, আমাদের কঠোর পরিশ্রমে গড়া জীবনের দুঃখ-কষ্ট আর হাঁসি-আনন্দের সকল বিষয়গুলো তুলে ধরুন। আমরা সহজ-সরল বলে সকলেই ঠকানোর চেষ্টা করে। আমরা দেশের নাগরিক। আমাদের অধিকার বঞ্চিত করা যাবেনা।

(বিএম/এএস/নভেম্বর ২২, ২০১৬)