লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : আজ ৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর মুক্ত দিবস। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়জুড়ে লক্ষ্মীপুর জেলা ছিল পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষত-বিক্ষত।

১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সর্বাত্মক আক্রমণ চালিয়ে এ জেলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। জেলাবাসী মুক্তি পায় পাক বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আল বদরদের হত্যা, লুট, আর নির্যাতনের হাত থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধারা নয় মাস জেলার বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে ১৯টি সম্মুখ যুদ্ধসহ ২৯টি দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এতে শহীদ হন ১১৪ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক হাজার মুক্তিকামী বাঙালি।

পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে সর্বপ্রথম মুক্তিযোদ্ধারা লক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম ব্রিজটি উড়িয়ে দেয়। আজও এর স্মৃতি হিসেবে ব্রিজের লোহার পিলার দাঁড়িয়ে আছে।

কয়েকজন প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা জানান, ৭১ সালের ২১ মে ভোর রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর ও দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ায় ভয়াবহ তাণ্ডবলীলা চালায় পাক হানাদার বাহিনী। বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে, বহু মানুষকে গুলি ও বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা। এতে শহীদ হন প্রায় ৪০ জন নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালি।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, একাত্তরের ১ ডিসেম্বর থেকে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হায়দার চৌধুরী এবং সুবেদার আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। অবশেষে ৪ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় হানাদার বাহিনী ও এর দোসররা।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সূত্র জানায়, দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছর শহীদদের কবর জিয়ারত ও মোনাজাত, র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৬)