বাগেরহাটে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অফিস, মাথায় হেলমেট
বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে চাকরি বাচাঁতে জীবনের ঝুকি নিয়ে হেলমেট মাথায় দিয়ে প্রতিদিন অফিস করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে এই অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছে ওই অফিসে বিভিন্ন কাজে আসা লোকজন। কেউ জীবনের ভয়ে জরাজীর্ন অফিস ভবনে প্রবেশ না করে প্রয়োজনীয় কাজ ফেলে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউবা আবার অফিসের কর্মচারীদের বাইরে ডেকে প্রয়োজনীয় আলাপ সেরে যত দ্রুত সম্ভব ফিরে যাচ্ছেন। এভাবেই ভয়ভীতি আর আতংঙ্কের মধ্যে চলছে বাগেরহাট জেলা রেজিট্রি অফিসের নিত্য দিনের কর্মাকান্ড।
বাগেরহাট জেলা রেজিস্টার অফিসে গত ২৮ নভেম্বর ওই অফিসের কম্পিউটার অপারেটর সামছুল আরেফিনের বসার স্থানে ভবনের ছাদের পলেষ্টর খসে পড়ে। ভাগ্যক্রমে প্রাণেঁ বেঁেচ যান সামছুল আরেফিন। প্রতি নিয়ত ঝরছে বালু, খসে পড়ছে দেয়াল ও ছাদের পলেস্টার। এঘটনার পর থেকে জীবন ও চাকরি বাচাঁতে বাধ্য হয়ে অফিস করছেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সব মিলিয়ে ভোগান্তি চরমে। অফিসের কর্মচারীরা মিলে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেও মিলেনি প্রতিকার বা অন্যত্র অফিস স্থানান্তরের কোন ব্যবস্থা। ব্রিটিশ সরকারের আমলের কোন এক সময়ে নির্মিত এ ভবনটির অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে, যে কোন সময় ছাদ ধসে ঘটতে পারে বড় ধড়নের র্দূঘটনা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে নতুন ভবনের জন্য জমি বরাদ্দের দাবী জানিয়েছে জেলা রেজিস্টার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জেলা রেজিস্টার অফিস সূত্র জানায়, বাগেরহাটে শহরের প্রান কেন্দ্রে সরুই মৌজার ৫৪ শতক জমিতে বৃটিশ আমলে আদালত ভবন নির্মিত হয়। পরবর্তী সময়ে বৃহত্তর পরিসরে নতুন ভবনে আদালত অন্যত্র নির্মিত হলে ওই স্থাপনা পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ওই পরিত্যক্ত ভবনে কিছু সংস্কার করে ১৯৯৭ সালে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পুরাতন আদালত ভবন জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, সদর সাব রেজিস্ট্রী অফিস ও মহাফেজ খানার জন্য বরাদ্ধ করে। সেই থেকে পুরাতন আদালত ভবন জেলা রেজিস্টার অফিস, সদর সাব-রেজিস্টী অফিস ও সদর রেকর্ড রুমের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া ১৯৮১ সালের ভূমির যাবতীয় রেকর্ডপত্র খুলনা সদর মহাফেজখানার ও জেলার ৯টি উপজেলা অফিসের ২০০৫ সাল থেকে যাবতীয় রেকর্ডপত্র স্থান পায় এই জরাজীর্ন ভবনের কারনে। বর্তমানে জরাজীর্ন এই ভবনটি চরম ঝুকিপূর্ন আস্থায় এসে দাড়িয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় চাকরি বাচাঁতে জীবনের ঝুকি নিয়ে হেলমেট মাথায় দিয়ে অফিস করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বাগেরহাট রেজিস্টার অফিসের জেলা নকল নবিস এসোসিয়েশনের সভাপতি তপন কুমার দাস বলেন, জেলা রেজিস্টার অফিস সব শ্রেনীর জনগনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। গত ২০ বছরে এ ভবনটি মাত্র একবার নামমাত্র সংস্কার করা হয়েছিল। বর্তমানে এই অফিস ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যে কোন মূহুর্তে ছাদ ধসে পড়ে বড় ধরনের র্দূঘটনার ঘটতে পারে। নতুন ভবনের জন্য জমি বরাদ্দ চেয়ে সংশিষ্ট মহলে জানানো হলেও কোন প্রতিকার মিলছে না। তাই আমাদের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা বাধ্য হয়ে চাকরি ও চাকরি বাচাঁতে জীবনের ঝুকি নিয়ে হেলমেট মাথায় দিয়ে অফিস করতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
(একে/এএস/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৬)