স্টাফ রিপোর্টার : র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, স্বদেশি-বিদেশি কিংবা আঞ্চলিক যার বিরুদ্ধেই জঙ্গিবাদে জড়িত থাকা ও মদদের প্রমাণ মিলবে তাকেই গ্রেফতার করা হবে। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশের মাটি জঙ্গিবাদের জন্য অনুকূল নয়। তাই জঙ্গিবাদ প্রশ্নে রাজনৈতিক মেরুকরণ নয়। রাজনৈতিক মদদ কিংবা পৃষ্টপোষকতা খোঁজার সুযোগও নেই।

‘মহাজোট সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ও জঙ্গি নির্মূলে জিরো টলারেন্স’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আজ তিনি এই মন্তব্য করেন।

দৈনিক নিউএজ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আলী হোসেন মিন্টুর সংগৃহীত তথ্যবহুল আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাসদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সামছুল ইসলাম সুমন।

বেনজীর আহমেদ বলেন, জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে বিজাতীয় ধারণা। এদেশের মাটি জঙ্গিবাদের জন্য অনুকূল নয়। পাকিস্তান আমলে প্রথম যে জঙ্গিবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা ছিল পশ্চিম বাংলায়। মার্কসবাদী আন্দোলন সেটা। সিরাজ শিকদারের মৃত্যুর পর তার বিলুপ্তি ঘটে।

এরপর আফগানিস্তানের যুদ্ধে তালেবানি তৎপরতা শুরু হয়। যুদ্ধ শেষে যুদ্ধ ফেরতরা আঞ্চলিকভাবে জঙ্গিবাদী তৎপরতা শুরু করে।

গত বছর গুলশানে আমরা জঙ্গিবাদী তৎপরতা দেখতে পাই। দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের গতি থামিয়ে দিতেই বিদেশিদের হত্যা করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও কঠোর অবস্থান এবং সাধারণ মানুষের জঙ্গিবাদের প্রতি ঘৃণা ও অবস্থানের কারণে তাদের নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে জঙ্গিদের বড় ধরণের কোনো নাশকতার শক্তি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

র‌্যাব ডিজি বলেন, পশ্চিমারা পারেননি। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী পেরেছেন। তিনি কঠোর অবস্থান নেয়ায় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারেনি।

তবে জঙ্গিবাদী তৎপরতা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এতে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। আমাদের সব সময় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখে দেশীয় জঙ্গিদের মোকাবেলায় সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা যেন আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারি সে জন্য সব সময় সোচ্চার থাকতে হবে।

আলোকচিত্র প্রদর্শনী শেষে র‌্যাব ডিজি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, পুরান জেএমবির সঙ্গে নতুন জেএমবির আদর্শিক ও নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ছিল। প্রথম তা প্রকাশ্যে আসে ২০১২ সালে। এরপর ২০১৫ সালে তানভীর কাদেরির নেতৃত্বেই মূলত: নতুনরা ও পুরাতন জেএমবির একাংশ নিয়ে আবারো অপতৎপরতা শুরু হয়। যদিও এখন পর্যায়ক্রমিক অপারেশনের কারণে ছিন্নভিন্ন জঙ্গি নেটওয়ার্ক। তাদের আর বড় হামলা চালানোর সক্ষমতা নেই।

অর্থদাতা ও নব্য জেএমবিতে কারা সক্রিয় তাদের সনাক্ত করা গেছে কিনা জানতে চাইলে র‌্যাব ডিজি বলেন, জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে এর আগে দেশি-বিদেশি অনেককে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। আর নব্য জেএমবিতে সক্রিয়দের তালিকা হালনাগাদের বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া বলে উল্লেখ করেন তিনি।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ১২, ২০১৭)