দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : এই সমাজের সকল ছেলে মেয়ে শিক্ষায় অংশগ্রহন করে দেশ ও দশের কাজ করবে। এটা শুধু আজ সরকারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তা নয়। আজকে একজন নিরক্ষর রিক্সা চালকও এ স্বপ্ন দেখছে।

সে দুর্গাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দিনমজুর মোঃ হেলিম মিয়ার ছেলে তারা মিয়া (২৬)। মা রহিমা খাতুন একজন গৃহিনী। তারা মিয়ার ৭ বছরের এক ছেলে ও স্ত্রী আছে। তার ছেলে পড়াশুনা করছে। ৩ ভাই এর মধ্যে সবার বড় তারা মিয়া। সংসারের দারিদ্রতার কারণে কেউই লেখাপড়া করতে পারেনি। এটাই তার মনের ব্যথা।

সে যখন দেখত ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে তখন সে ভাবত এবং স্বপ্ন দেখত, আমি এবং আমরা তিনভাই শুধু মাত্র দারিদ্রতার কারণে লেখাপড়া করতে পারি নাই। বড় হয়ে নিশ্চয় কিছু না কিছু করব। যখন আমি আয় করব, তখন আমি আমার সংসার চালিয়ে যে সকল গরীব ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করতে অসুবিধা হবে, আমি আমার সাধ্যমত তাদেরকে সহযোগিতা করব। গত ১ বছর পূর্বেও তিনি রিক্সা ভাড়া চালাত এর পর সে নিজে ব্যাটারি চালিত বিক্সা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছে। এবং সে অস্বচ্ছল ছেলে মেয়েদের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে। তা আজকে প্রায় ৬ মাস যাবৎ বিভিন্ন সময়ে, বারমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ জন ছেলে মেয়েকে খাতা কলম, নলুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০ জন ছেলে মেয়েকে খাতা, ৭ জন প্রতিবন্ধী শিশুকে টিফিন বক্স, চকলেঙ্গুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪০টি খাতা কলম, দেবথৈল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০ জন আদিবাসী শিশুকে খাতা দিয়েছেন। সে প্রতিদিন তার নিজের ঘরে একটি মাটির ব্যাংকে ১০ থেকে ২০ টাকা করে সঞ্চয় করে সেই অর্থ দিয়ে এ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

আজকের এই সমাজে তারা মিয়ার মত বিত্তবানরাও যদি একটু একটু করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় কোন ছেলে মেয়েই আর শিক্ষার বাইরে থাকরে না। পারিবারিক ভাবে পরিবার হবে প্রতিষ্ঠিত। সমাজ হবে সুশিক্ষায় দুর্নীতি মুক্ত। বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর মধ্যে একটি সুন্দর দেশ। এ স্বপ্নই দেখছেন তারা মিয়া।

(এনএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৭)