মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : “মোদের গর্ব মোদের আশা আ-ম-রি বাংলা ভাষা”। যে ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে আন্দোলনে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেকে শহীদ হয়েছিলেন। আজ তাঁদের আত্মত্যাগের জন্যই বিশ্বের দরবারে আমরা মায়ের ভাষা তথা বাংলা ভাষার স্বীকৃতি স্বরূপ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি লাভ করি। অমর একুশে ফেব্রুয়ারি যেন তারই প্রতীক। অথচ নেত্রকোনার মদন উপজেলার হাতে গোনা কয়েকটি বিদ্যালয় ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।

আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগররা এর ইতিহাস অজানা থাকবে। আর এর কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা ও শহীদ দিবসে দায়সারা গোছের অনুষ্ঠান। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় তিনটি কলেজ, ১৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮ টি মাদ্রাসা ও ৯৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এবং রয়েছে অর্ধশতাধিক কিন্ডার গার্টেন স্কুল। এর মধ্যে কয়েকটি মাধ্যামিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার নেই। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা বাঞ্চনীয় থাকলেও শহীদ মিনার না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছেনা। উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ সরকারি হাজি আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজসহ তিনটি কলেজ, বেশির ভাগ মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে একুশে ফেব্রুয়ারি মানে শুধুই ছুটির দিন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছে আরো অন্ধকারে।

এ ব্যাপারে সরকারি হাজি আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী বিপাশা, সজীব, ফয়েজ আহম্মদ হৃদয়, মোজাম্মেল হক, রবি ও টিটু জানান, শহীদ মিনার নির্মাণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে এ দিন গুলোর গুরুত্ব হারিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি কোন বরাদ্দ না থাকায় বিষয়টি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে শহীদ মিনার নির্মাণে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল রশিদ জানান, প্রতিটি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। তবে যে সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই তাদেরকে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, ডিগ্রি কলেজে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা হয়েছে । স্থান নির্ধারণ করে শীঘ্রই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।

(এএমএ/এএস/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭)