ভারত, আফগানিস্তান ও ইরানের বন্ধুত্বের প্রতীক ছাবাহার বন্দর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত ও পাকিস্তানের সব কিছু নিয়েই রেশারেশি। স্থলপথ বাণিজ্য নিয়ে কিছু দিন ধরেই চলে আসছে আরা বেশি খারাপ অবস্থা। তবে এবার পাকিস্তান আর ঠেকাতে পারল না ভারতকে। ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যে বাধা ছিল পাকিস্তান, কারণ স্থলপথে পাকিস্তানের উপর দিয়ে পন্য আনা নেওয়া করত এই দুই দেশ। ভারত ও ইরান যৌথ উদ্যোগে ছাবাহার বন্দরটি আধুনিকায়নের কাজ প্রায় শেষ। বন্দর খুললেই চালু হয়ে যাবে ভারতের সাথে বিভিন্ন দেশের নৌপথের ব্যবসা।
২০১৬ সালের মে মাসে ভারত, ইরান ও আফগানিস্তান মধ্যে ছাবাহার বন্দর নিয়ে চুক্তি হয়। আর চুক্তিতে ভারত শর্ত রেখে দেয়, এখানে বিনিযোগের ফলে তারা বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিবে। আর এই বন্দর চালু হওয়ার আগেই চীন ও পাকিস্তান ভয় পাচ্ছে ভারত মধ্য এশিয়ার সাগরে তাদের নৌ-ঘাটি তৈরি না করে!
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত তথা জলসীমার খুব কাছে অবস্থিত ছাবাহার বন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেয় ভারত। বিনিময়ে মেলে ছাবাহার বন্দর ব্যবহারের অধিকার। আফগান কূটনীতিক সম্প্রতি বলেছেন, আর এক মাসের মধ্যেই ছাবাহার বন্দর খুলে যাচ্ছে এবং তাতে ভারত-আফগান বাণিজ্য আরও গতি পাবে।
আফগানিস্তান অনেক আগেই তালেবানদের সাথে যুদ্ধ শেষ করেছে কিন্তু এখনও ক্ষয় ক্ষতির চিহ্ন বহন করছে দেশটি। ভারতের বিনিয়োগে ছাবাহার বন্দরটি চালু হতে বাকি মাত্র এক মাস। কিন্তু চিন ও পাকিস্তানের তৈরি করা নৌবন্দর গোয়াদর তাহলে অচল হয়ে পড়বে। আর সেইদিক থেকে তাদের আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। চীন ও পাকিস্তান গোয়াদর বন্দরটি তৈরি করেছিল যাতে বিভিন্ন দেশ তাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। কিন্তু যেহেতু ভারত ও ইরানের তৈরি ছাবাহার বন্দর ব্যবহারে ২০০কি:মি: পথ কম লাগবে সেহেতু অন্য দেশগুলো গোয়াদর বন্দর ব্যবহার করবে না। মূলত এই ভয় পাচ্ছে ভারতে অন্যতম প্রতিদ্বন্দী দেশদুটি। তাছাড়া সম্প্রতি ভারতের ইচ্ছা মধ্য এশিয়ার সমুদ্রে ভারত স্থায়ী ঘাটি তৈরি করবে।
মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের প্রশ্নে গোয়াদরের চেয়ে ছাবাহারের অবস্থান অনেক সুবিধাজনক। তাই গোয়াদর থেকে যে ভাবে অর্থনৈতিক লাভ পাওয়ার আশা করেছিল চিন-পাকিস্তান, তা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা তো থাকছেই। আরব সাগরের বুকে চিনা ঘাঁটির শ’খানেক কিলোমিটারের মধ্যে ভারতের পাল্টা আস্তানাও তৈরি থাকছে। স্বাভাবিক ভাবেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে বেজিং এবং ইসলামাবাদের কর্তাদের।
(ওএস/এসএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭)