নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামে স্ত্রীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে স্বামী নিহত হয়েছে। পুলিশ নিহত সেলিম হোসেনের  স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে আটক করেছে। বুধবার ভোর রাতে উপজেলার লক্ষীপুর উত্তরপাড়া এলাকায় এই হত্যা কান্ডের ঘটনাটি ঘটে। পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানায়।

এদিকে পুলিশের হাতে আটক জেসমিন সাংবাদিকদের জানায়, তার দিনমজুর স্বামী সেলিম হোসেন নিয়মিত নেশা করতো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। বুধবার বিকেলে ঘরে থাকা চাউল বিক্রি করে নেশার টাকা দিতে বললে দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এতে সে রাগান্বিত হয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ভোর রাতে সে বাড়ি ফিরে আসে এবং ওই চাউল বিক্রির কথা বললে আবারও দু’জনের মধ্যে বাকতিন্ডা শুরু হয়। ওই বাক বিতন্ডার একপর্যায়ে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার লক্ষীপুর উত্তরপাড়া এলাকায় দিনমজুর সেলিম হোসেনের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে স্ত্রী জেসমিনের ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে জেসমিন ঘাসকাটা ধারালো হাসুয়া দিয়ে স্বামী সেলিমকে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় প্রতিবেশীরা চিৎকার শুনে ওই বাড়িতে ছুটে গিয়ে সেলিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তারা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। এসময় জেসমিনকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয় কাউন্সিলর আব্দুস সাত্তার জানান, প্রায় ৬ বছর আগে লক্ষীপুর উত্তরপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সেলিম হোসেনের সাথে পার্শ্ববর্তী লক্ষিপুর গ্রামের লোকমান ফকিরের মেয়ে জেসমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জেসমিন জানতে পারে যে সেলিম হোসেন নেশাগ্রস্থ। নেশার টাকা যোগাড় করতে সে চাল সহ পরিবারের বিভিন্ন জিনিস স্ত্রীর অগোচরে বিক্রি করত। এনিয়ে প্রায়ই তাদের পারিবারিক কলহ হত। বুধবার সকাল ৭টার দিকে নেশার টাকা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে জেসমিন ঘরে থাকা ঘাস কাটা হাসুয়া দিয়ে সেলিমকে কোপ দেয়। এ ঘটনায় সেলিম হোসেনের মা শানু বেগম বাদী হয়ে জেসমিনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওসি ইব্রাহীম হোসেন জানান, নিহতের চার বছর বয়সের একটি ছেলে রয়েছে। পারিবারিক বিরোধেই এই হত্যার ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। নিহতের মা শানু বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।

(এমআর/এইচআর/এএস/জুন ১৮, ২০১৪)