চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘ ১৯ ঘণ্টার অভিযানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ও গুলিতে এক নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হয়েছে।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন জানান, শুরুতে জঙ্গিদের তরফ থেকে কয়েক দফা গ্রেনেড হামলা এবং রাতভর গোলাগুলির পর ভোরে পুলিশ সদস্যরা ছাদ হয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে যায়। এসময় এক নারীসহ দুই বা তিনজন চিলেকোঠার সামনে এসে দাঁড়িয়ে ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণ’ ঘটায়। এতে তাদের নাড়িভুড়ি ও শরীরের কিছু অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেছে।

বিস্ফোরণে চিলেকোঠা উড়ে গেছে। এ অবস্থায় তারা পিছু হটে কিছুটা দূরে সরে এসেছেন। নতুন ‘স্ট্র্যাটেজিতে’ আবার বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে সীতাকুণ্ড শহরের প্রেমতলা ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়ার ‘ছায়ানীড়’ নামের একটি দোতলা বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সোয়াত টিম। বিশেষ এ দলের সঙ্গে অভিযানে অংশ নিচ্ছে চট্টগ্রামের সোয়াত, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।

জানা গেছে, অভিযানকালে সোয়াতের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের প্রথমে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি সফিকুল ইসলাম সকাল সোয়া ১০টায় ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত চারটি ডেডবডি সেখানে দেখেছি।তাদের দুজনের শরীরে ছিল সুইসাইড ভেস্ট। বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। দুজন মারা গেছে পুলিশের গুলিতে। দেহগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ভেতরে আর কেউ নেই।”

তিনি জানান, অভিযান প্রাথমিকভাবে সমাপ্ত হলেও তাদের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা ভেতরে কাজ করছেন।

ওই বাড়ির বিভিন্ন ফ্ল্যাটে সারারাত আটকে থাকা তিন পরিবারের ২০ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেডে তিন পুলিশ সদস্য এবং গ্রিল কাটতে গিয়ে ফায়ার ব্রিগেডের এক সদস্য আহত হয়েছেন বলে সফিকুল ইসলাম জানান।

(ওএস/এসপি/মার্চ ১৬, ২০১৭)