ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : স্বাধীনতা মেলার নামে চলা জমজমাট জুয়ার আসর, অশ্লীল নৃত্য ও প্রাত্যহিক অবৈধ লটারি বন্ধ করে দিয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এলাকার সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের মুখে গত ২৩ মার্চ ওই মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে বানানো হয়েছিল ওই স্বাধীনতা মেলার ব্যানার। ব্যানারে ব্যবহার করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু ও তাঁর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবিও। এদের ছবি ব্যবহার করেই চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের চারাবটতলে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতা মেলা। এই মেলা শুরু হয়েছিল গত ১৭ মার্চ।

স্বাধীনতা মেলার নামে জুয়া, অশ্লীল নৃত্য ও অবৈধ লটারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুন্দরপুর ইউনিয়নের চারাবটতলের মানুষ স্বস্তি পেয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতা মেলার নামে অশ্লীল ও অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করার পরও স্বাধীনতা মেলার প্যান্ডেল ভাঙেনি আয়োজকরা। আয়োজকদের বক্তব্য, ঘাটে ঘাটে ২০ লাখ টাকা ঢেলে তারা স্বাধীনতা মেলার অনুমতি নিয়েছিল। এখন বন্ধ করে দিলেই হল! তাদের টাকা তুলতে তারা সেখানে সার্কাস চালাবেন। সার্কাসের আয়োজন করতেই মেলার প্যান্ডেল ভাঙা হয়নি। আর এই খবরে চারাবটতলের মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছে। চারাবটতলের মানুষ বলছেন, ওরা সার্কাসের অনুমতি নিয়ে আবার জমজমাট জুয়ার আসর বসাবে, মঞ্চে চলবে আবার অশ্লীল নৃত্য ও অবৈধ লটারি। তাহলে আর মেলা বন্ধ করে লাভ কি হল মানুষের!

সুন্দরপুর ইউনিয়নের চারা বট তলের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই বছর ধরে মার্চ মাসে স্বাধীনতা মেলার নামে জুয়া, অবৈধ লটারি, অশ্লীল নৃত্য চলছিল তাদের গ্রামে। আয়োজকরা প্রায় সকলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় টু শব্দ করবার উপায় ছিল না কারোরই। স্বাধীনতা মেলা আয়োজক কমিটির নামে এই মেলা পরিচালিত হচ্ছিল। সেই কমিটির নেতৃত্ব দেন থানার দালাল হিসেবে পরিচিত কাঞ্চন, সুন্দরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সফিউল আজম, এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত মহিউদ্দিন, পার্শ্ববর্তী পাইন্দং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মালেক, পাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর নুরুল ইসলাম গুন্নু প্রমুখ।

কেউ কেউ ওই অশ্লীল মেলার প্রতিবাদ করায় তাদের দেওয়া হয়েছে খুনের হুমকি। অতিষ্ঠ মানুষ চোখ-কান বুজে সয়ে যাচ্ছিলেন সব। অবশেষে মেলা বন্ধ করে দেওয়ায় দারুণ স্বস্তি ফিরেছিল চারাবটতলে। মেলার আগের প্যান্ডেল ব্যবহার করে আবার সেখানে সার্কাস দেওয়ার খবরে এলাকায় আবার জন্ম নিয়ে অস্বস্তি। সেই আয়োজকরা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে , সার্কাসের ব্যাপারে কেউ নাক গলালে পরিণাম হবে ভয়াবহ।

(পিএস/এএস/মার্চ ২৫, ২০১৭)