বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রবিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের বারুণী স্নানোৎসব উদযাপিত হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে পুণ্যার্থীর ভিড় জমে। ভোর থেকে শুরু হয় স্নান, চলে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত। এতে শুধু এলাকার নয়, দূর-দূরান্তের হিন্দু ধর্মবলম্বীরাও যোগ দেন। হাজারো পুণ্যার্থীর ভিড়ে জলপ্রপাত এলাকা মুখর হয়ে ওঠে। ছোট-বড় অসংখ্য গাড়ির দীর্ঘ সারি হয় মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে আসা-যাওয়ার রাস্তায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই নন, অন্য ধর্মের মানুষও উৎসবের আনন্দে ছুটে আসেন এখানে। বারুণী স্নান উপলক্ষে মাধবকুণ্ড এলাকায় বসে রকমারি পণ্যের মেলা।

মাধবকুণ্ড উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনুকুল চন্দ্র দেব বলেন, ‘ধারণা করা যাচ্ছে পুণ্যস্নানে এ দিন অন্তত ২০ হাজার মানুষ এসেছেন। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যার ফলে কোন ধরণের দুর্ঘটনা কিংবা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি।’

এদিকে অনেকে অভিযোগ করেছেন, ‘বারুণী স্নানের দিন গাড়ি পার্কিং এ টোল না নেওয়ার কথা থাকলেও ইজারাদার তা আদায় করেছেন। এছাড়া টোল আদায় নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক পুণ্যার্থীর সাথে ইজারাদারের লোকজন অসদাচরণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ছোট-বড় গাড়ি প্রতি ২০ থেকে ৫০, ১০০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে ইজারাদার আলা উদ্দিন পুণ্যার্থীর সাথে তার লোকজনের অসদাচরণের বিষয়টি জানা নেই জানিয়ে বলেন, ‘আমরা হিন্দু পুণ্যার্থীদের কাছ থেকে কোন টোল আদায় করা হয়নি। এখানে মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছ থেকে টোল আদায় করা হয়েছে।’

রাস্তায় টোল আদায়ের ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বক্ত্যব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ‘পুণ্যার্থীদের গাড়ি থেকে টোল আদায়ে নিষেধ করা হয়েছে। এটা দেখার জন্য আমাদের লোকবল নাই। প্রতিবারই এরকম অভিযোগ আসে। এটা স্থানীয় প্রশাসনের দেখার কথা। টাকা আদায়ের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইজারাদাররা অস্বীকার করে।’

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ সহিদুর রহমান বিকেলে সাড়ে ৫টায় জানান, ‘নির্বিঘ্নে বারুণী স্নানোৎসব উদযাপিত হয়েছে। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।’

(এলএস/এএস/মার্চ ২৬, ২০১৭)