জয়পুরহাট প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার দেবিশাওল গ্রামে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকাতে গলার ফাঁস দিয়ে মার্জিয়া সুলতানা (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার সকালে মার্জিয়ার বাবা দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন। পরে দুপুরে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ ।

মার্জিয়া আক্কেলপুর উপজেলার দেবিশাওল গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনের মেয়ে ও পার্শ্ববর্তী রায়কালি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

প্রতিবেশী ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মার্জিয়ার বাবা তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছিলেন। সোমবার বরপক্ষের লোকজন তাকে দেখতে আসার কথা ছিল। কিন্তু পড়ালেখা করা অবস্থায় বিয়েতে সে রাজি ছিল না। এ অবস্থায় পরিবারের চাপ সহ্য করতে না পেরে রোববার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় নিজের শয়ন কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা ও রায়কালি ইউপির সাবেক মেম্বার আশরাফুল ইসলামসহ এলাকাবাসী জানান, মেয়ে থাকলে তো এখান-সেখান থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসবেই। তাই বিভিন্ন স্থান থেকে মার্জিয়ারও বিয়ের প্রস্তাব আসা অস্বাভাবিক নয়।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্জিয়ার একাধিক সহপাঠী জানায়, মার্জিয়ারা পাঁচ বোন। এদের মধ্যে দুইজন প্রেম করে নিজের পছন্দমত বিয়ে করেছে।তাই মার্জিয়াও বড় হচ্ছে দেখে তার বাবা আগে ভাগেই মেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। সোমবার নওঁগা বা নিকটবর্তী বগুড়ার সান্তাহার থেকে পাত্র পক্ষ মার্জিয়াকে দেখতে আসার কথা ছিল। শুধু তাই নয়, পছন্দ হলে বিয়ের দিন তারিখও নির্ধারণ করা হবে বলে সব ঠিকঠাক হয়। এতে অভিমান করে মার্জিয়া আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।

রায়কালি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিন জানান, নবম শ্রেণির মার্জিয়া বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করতো। সে লেখাপড়ায় ভালো ছিল। বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে বলে প্রায় বলতো।এমন মেধাবী ছাত্রীর অকাল মৃত্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বলে জানান তিনি।

আক্কেলপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় মার্জিয়ার নানা হবিবর রহমান অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৮, ২০১৭)