বাগেরহাট প্রতিনিধি : জমে উঠেছে মংলা বন্দর কর্মচারী সংঘের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। মামলা জটিলতার কারণে দীর্ঘ ৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়ায় এই নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বিভিন্ন পদের প্রতিদ্বন্ধিতাকারী প্রার্থীরা।

তবে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা নির্বাচনের দাবীতে সংঘের যে সব নেতা-কর্মীরা আন্দোলনের মাধ্যম্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তাদের প্রতিই সাধারণ ভোটারদের সমর্থন একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। আগামী ৭ মে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের নির্বাচনে দুইটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেনা প্রার্থীরা। কর্মচারী সংঘের ১৩টি পদে ৫৫ জন প্রতিদ্বন্ধীকারী প্রার্থীর অধিকাংশই হচ্ছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।

মংলা বন্দর কর্মচারী সংঘের নির্বাচনে এবার সভাপতি পদে নাছির উদ্দিন মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো. ফিরোজ প্যানেল ও অপর প্যানেলে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন সভাপতি পদে সাইজউদ্দিন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী খুরশিদ আলম পল্টু। বিগত দিনে নির্বাচন, বন্দরের উন্নয়ন ও অধিকার আদায়ে কোন প্রার্থী বা প্যানেল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সেই বিষয়টি অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে ভোটারদের কাছে। কর্মচারী সংঘের ১৩টি পদের জন্য ৫৫ জন প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ভোট যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন। ভোটারদের মন রক্ষা ও আকৃষ্ট করতে নানা ধরণের উন্নয়নসহ সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস দিয়ে দ্বারে-দ্বার ছুটছেন প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা।

নাছির-ফিরোজ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. ফিরোজ বলেন, আইন- আদালত ও আন্দোলন করেই আমাদের প্যানেলের নেতারা আজ সবার জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। সাধারণ ভোটারদের সমর্থনে আমিসহ আমার প্যানেল নির্বাচিত হলে সকল আঞ্চলিকতার উর্ধে থেকে কাজ করে যাব। ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী শ্রমিক-কর্মচারীর ন্যায় সঙ্গত উপেক্ষিত দাবীগুলো মধ্যে পোষ্য/নির্ভরশীল কোঠা পুর্নবহাল, জাহাজি কর্মচারীদের চুক্তি অনুযায়ী অধিকাল ভাতা পুনবহাল, বন্দরের অপচয় রোধ করতে সোচ্চার হবো।

অপরদিকে সাইজউদ্দিন ও পল্টু প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কাজী খুরশিদ আলম পল্টু বলেন, আমাদের প্যানেলের শীর্ষ ব্যক্তিরা সবাই আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরিক্ষিত নেতা। বর্তমান সরকার মংলা বন্দর সচল করেছে। শত-শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমি আশাবাদি মংলা বন্দরকে এগিয়ে নেয়াসহ শ্রমিক-কর্মচারীর ন্যায় সঙ্গত উপেক্ষিত দাবীগুলো বাস্তবায়ন করতে ভোটাররা আমাদের প্যানেলকেই নির্বাচিত করবে।

এবার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকায় সাধারণ ভোটার ও প্রার্থীরা বলছেন, এমপি তালুকদার আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে তাদের বিশ্বাস। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অপর দুই সদস্য মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সিনিয়র ডেপুটি ম্যানেজর (প্রশাসন) ও নির্বাচনের সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং সচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ) ওহিউদ্দিন চৌধুরী।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র সুষ্ঠুভাবে বাছাইয়ের পর বৃহস্পতিবার প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নির্বাচনী কার্যক্রম চলছে, আগামী ৭ মে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

(এসএকে/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০১৭)