গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৭শ’ হেক্টর জমির ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এসব ধান গাছের গোড়া পচে গেছে। এছাড়া শীষের ধানের মধ্যে চাল নেই। এজন্য ওই এলাকার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেকে এনজিও থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে ধান আবাদ করলেও ফসলের এমন চিত্র দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

উপজেলার দরবস্ত, সাপমারা, তালুককানুপুর ও শাখাহার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকের জমিতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে সাপমারা ইউনিয়নের মাল্লা গ্রামের রাস্তা দিয়ে যেতেই দেখা হয় কৃষক তায়েফ আলীর সঙ্গে। তিনি আধা-পাকা জমিতে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। শেষ সময়ে এসে ধানে ওষুধ ছিটাচ্ছেন কেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বাবা কী আর করমু। ধার দেনা করি সাত বিঘা জমিত ধান লাগাছি। ফলন ভালোই হবে বলে আশা করছিনো। শেষ সময় আসি ধানের কী যে হলো কিছুই বুঝবার পারতেছি না। সব ধানের গাছের গোড়া পচে যাচ্ছে। তাছাড়া যেগুলো শীষ বের হইছে সেগুলোতেও কোন ধান নেই। কিছু ধান যদি পাওয়া যায় তাহলে কিছুটা হলে ধারদেনা শোধ করতে পারমু। এই আশায় আধাপাকা ধানেও স্প্রে করছি।’

শুধু তায়েফই নন এই উপজেলার হাজারো কৃষক এখন সর্বশান্ত হয়ে গেছে। তারা বলছেন এই বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। বিশেষ করে ২৮ জাতের ধানে এ রোগ দেখা দিয়েছে।

দরবন্ত ইউনিয়নের মীরুপাড়া গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, ‘ডিলারের পরামর্শ নিয়ে ধানোত কীটনাশক দিলেও আমার পরয় ৮/৯ বিঘা জমির ধান নষ্ট হওচে। এখন যে ধান আছে তা কাটতে গেলে কিষাণীর মজুরি দেয়া ছাড়া আর কোনো লাভ হবাননায়।’

এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছাহেরা বানু বলেন, ‘আসলে এই রোগটা এবারই প্রথম দেখা যাচ্ছে। এটা শুধু গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় নয় সারাদেশেই এমন হয়েছে। অনেক কৃষক লক্ষণ দেখে আমাদের কাছে পরামর্শ চেয়েছে। আমাদের পরামর্শে এ ব্লাস্ট রোগ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময়ই কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ দিয়ে থাকি। অনেক কৃষক এ রোগের লক্ষণ হয়তো বুঝতে পারেনি। যে কারণে তাদের ধানে এ ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে।

(ওএস/এসপি/মে ০২, ২০১৭)