স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের বিষয়ে শ্রমিকরা দীর্ঘ দিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন।

তবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেছেন, ‘দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ক্ষেত্র বিবেচনা করলে, জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সময় এখনো আসেনি।’

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় ‘শ্রম আদালতের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে আনুষ্ঠানিক এডিআর এর ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে ‘ব্লাস্ট’।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের শ্রমিকদের কাজের ধরন ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে জাতীয় শ্রমমূল্য নির্ধারণ সম্ভব নয়। শ্রমিকদের উন্নয়ন নিয়ে আমরা এখনো শিখছি। আলোচনা করছি, জ্ঞান বাড়ছে। কর্মস্থলে শ্রমিকের নিরাপত্তা আগে আলোচনা হতো না এখন হচ্ছে। আমরা ধীরে ধীরে শ্রমিকের উন্নতির পথে হাঁটছি।’

শ্রম আদালতের সিংহভাগ মামলা মজুরিসংক্রান্ত এমন কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরি দেওয়ার বিষয়ে মালিক পক্ষ জেনেশুনে সমাধান করে না। বেশিরভাগ সময় মালিকরা আদালতের আদেশ পালনেও তালবাহানা করে।’

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের সঙ্গে বেতন নিয়ে ঝামেলা হলে মালিকরা সরাসরি বলে মামলা করতে। কারণ তারা জানে শ্রমিক নিজে খাবে নাকি আইনজীবী চালাবে। আর আদালত শ্রমিকের পক্ষে রায় দিলে মালিকরা তালবাহানা করেন।’

এ বিষয়ে মালিকরা তাকে অনেক বার বলেছে এমন কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মালিকরা এমন করার কারণ হলো এক শ্রমিক যদি মামলা করে সমাধান দ্রুত পায়, তাহলে অনেক শ্রমিক একই পথে হাঁটবে। তাই মালিকরা এসব তালবাহানা করে।’

এ প্রসঙ্গে মুজিবুল হক বলেন, ‘শ্রমিকরা যেন দুই মাসের মধ্যে তাদের অধিকার আদায় করতে পারে। সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য যে সকল সংগঠন শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে, তারা লিখিতভাবে আইনের দুর্বলতা চিহ্নিত করে দেবেন। আমরা অতিদ্রুত কার্যত পদক্ষেপ নেব।’

তিনি জানান, দেশে বর্তমানে মাত্র সাতটি শ্রম আদালত রয়েছে, যা যথেষ্ট নয়। শ্রম আদালত বৃদ্ধি করার কাজ চলছে বলেও জানা তিনি।

এ সময় শ্রমিকদের বেতন সমস্যা সমাধানে আইনের দুর্বলতা চিহ্নিত করে মালিকরা যেন পার পেতে না পারে তার বব্যস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিজামুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. ইসরাফিল আলম, ব্লাস্ট উপপরিচালক মো. বরকত আলী প্রমুখ।

(ওএস/এএস/মে ০২, ২০১৭)