ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীতে আজব লাল যাদব (৬০) নামের এক ভারতীয় নাগরিকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে তার ঠিকানা ভারতের বিহার রাজ্যের পিথাও গ্রামে এবং ডাকঘর উশ্রি বলে জানা গেছে।

নিহত যাদব ভারতের রাম বিলাস যাদবের ছেলে। রবিবার সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই তালুকদার ঘটনার সত্যতা ম্বীকার করে জানান, ঈশ্বরদীর ঢুলটিতে রশিদ ওয়েল মিলে চাকরী করতেন।

রশিদ ওয়েল মিলের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে যাদব চাকুরী ছেড়ে দেন।

কিন্তু স্থানীয়রা জানান, যাদবকে সেখানেই কর্মরত দেখা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মিলের পাশেই জনৈক এক মহিলার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে নানা রকমের গুঞ্জনও রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন ওই মহিলার সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। আবার কেউ কেউ বলছেন তার সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল।

শনিবার দিবাগত রাতে যাদব হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কে বা কারা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। রোববার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কারা ভর্তি করে এব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানেন না।

এব্যাপারে মিল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর সে এই মিল ছেড়ে ভারত চলে যায়। যাদব এক বছর ধরে পাবনায় বসবাস করছিল বলে মিলের সাথে সংশ্লিষ্ঠরা বললেও এই বক্তব্যের সাথে স্থানীয় লোকজন দ্বিমত পোষণ করেছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, যাদব এই মিলেই কর্মরত ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, যাদবের ভিসার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছিল। সে অবৈধভাবে মিলে কর্মরত থাকার কারণে মিল কর্তৃপক্ষ তার কর্মরত থাকার বিষয়টি গোপন করছে। এব্যাপারে রশীদ ওয়েল মিলের মালিক আব্দুর রশীদের সাথে ০১৭৩২-২৪৩৩৬৫ নম্বর মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোনের সুইচ ষ্টফ ছিল।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই তালুকদার জানান, ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের জনৈক সাইফুল্লাহ এর মেয়ে নাসিমা আক্তারের কাছে যাদব মাঝে মধ্যেই যাতায়াত করতো। গত শনিবারও সে নাসিমাদের বাড়িতে যায়।

ওসি আরো জানান, নাসিমাদের বাড়িতেই যাদব বিষপাণ করেছিল বলে নাসিমা ও তার বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারাই পাবনা হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে সটকে পড়ে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। এঘটনায় পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির, ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহুরুল হক, থানার অফিসার ইনচার্জ কালিকাপুরে নাসিমাদের বাড়িতে যেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

তবে, বিষপান অথবা অতিরিক্ত মদ্যপান করিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ধারণা করছে। সঠিক কারণ উদ্ধারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে ওসি জানিয়েছেন। তবে ভারতীয় নাগরিকের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

(এসকেকে/এসপি/মে ০৭, ২০১৭)