সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : বন্যা ও ভাঙ্গনের কবল থেকে আবাদী ফসল ও ঘরবাড়ি রক্ষায় সিরাজগঞ্জে যমুনাপাড়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরে আরো একটি রীং বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জের উজানে সদর উপজেলার বাহুকা ও কাজীপুর উপজেলার শুভগাছা এবং বীরশুভগাছায় পানি উন্নয়ন বিভাগ জরুরীভিত্তিতে এই বাঁধ নির্মাণ করছে। এতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সিরাজগঞ্জের উজানে এবং ভাটিতে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দেয়। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় বাহুকা, শুভগাছার প্রায় আড়াইশ ফুট বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এছাড়াও প্রায় দুই কিঃমি এলাকা জুড়ে বাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। পুরো বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানিতে মানুষের জানমালের ক্ষয় ক্ষতির কথা ভেবেএলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে।

সিরাজগঞ্জে যমুনাপাড়ের অসময়ের ভাঙ্গনে জমি-জিরাত ও জনগণের ক্ষয়ক্ষতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাহুকা, শুভগাছায় বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরে আরো একটি রিং বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ করার জন্য ইতোমধ্যেই প্রকল্প এলাকায় চারটি এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করা হয়েছে। তাছাড়াও যমুনা নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজিং করে অপসারিত মাটি বাঁধের কাজে ব্যহারের জন্য স্থানীয়ভাবে দুটি ড্রেজিং মেশিনও কাজ শুরু করেছে। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তিও ফিরেছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সিরাজগঞ্জের উজানে এবং ভাটিতে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

উজানে ভাঙ্গছে সিরাজগঞ্জ সদরের বাহুকা, কাজীপুরের শুভগাছা এবং ভাটিতে চৌহালী উপজেলা সদরে। ভাঙ্গনে গত তিন দিনে বাহুকা ও শুভগাছায় আবাদী জমিসহ মূল বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় দুই শ” ফুট এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। শতাধিক বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। গত ৩মে দুপুরে বাহুকায় আকস্মিকভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ মুল বাঁধের প্রায় দুই শ’ফুট এলাকা ভেঙ্গে এপার ওপার হয়ে যায়। গত এক সপ্তাহ যাবত বাহুকা ও কাজীপুরের শুভগাছায় যমুনা নদী ভাঙ্গছে। ভাঙ্গনে জমি-জিরাতসহ মানুষের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ভাঙ্গনরোধে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ভাঙ্গন প্রশমনে তা সফল হয়নি। বুধবার আকস্মিক বাঁধ ভেঙ্গে গেলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম যমুনার ভাঙ্গন প্রসঙ্গে বলেছেন, অসময়ে যমুনায় এমন ভাঙ্গন এর আগে কখনও হয়নি। তবে পানি কম থাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যমুনা নদীর ভাঙ্গন থেকে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেরার খুদবান্দি, সিংড়াবাড়িও বাহুকা শুভগাছা এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষামুলক কাজের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়ে তা উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার শ পঁয়ষট্টি কোটি টাকা। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদনের পর বর্ষার আগেই তা শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্শে পেয়ে ভাঙ্গন এলাকায় প্রায় দুই কিমি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।

(এমএস/এসপি/মে ১৪, ২০১৭)