মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া : ঘরে ভাত নেই। তাই ছেলে ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে চুলায় মিষ্টি আলু সিদ্ধ করতে দিয়ে ঘরে সন্তান ও নাতনীকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে মা হাসুন ভানু (৩৫)। কিন্তু এই ঘুমই কাল হয়ে দাড়ায়। হঠাৎ প্রচন্ড বাতাসে চুলোর আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা রান্না ঘরে। মুহুর্তের মধ্যে তা ঘরের বেড়ায় লেগে যায়। হঠাৎ আগুনের উত্তাপে ঘুম ভাঙ্গে তাদের। দুটি শিশু নিয়ে দ্রুত বাইরে বের হতে পারলেও আগুনের লেলিহান শিখায় চোখের সামনে পুড়ে যায় মাধা গোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়নের চরচাপলী গ্রামে বুধবার গভীর রাতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গৃহবধু হাসুন ভানু বলেন, মোর ঘরের ডাইল, কয়ডা মুড়ির ধান আছিলো। কয়দিন আগে কোলা (ক্ষেত) দিয়ে টোহাইয়া পাইছি। ৭/৮টা হাস-মুরা (মুরগী) আল্লে। কিচ্ছু নাই। আগুনে সব জইল্লা গ্যাছে। হায় আল্লাহ কি ঘুমডাই না মোরে দেলা। এভাবেই সর্বস্ব হারিয়ে সে বিলাপ করছে।

স্থানীয় গ্রামবাসী মশিউর রহমান জানান, ঘরে স্ত্রী, সন্তান ও এক নাতনীকে রেখে কাজের সন্ধানে পোর্ট এলাকায় যায় গৃহকর্তা শ্রমজীবি রুহুল আমিন। রাতে হঠাৎ অগ্নিকান্ডে তার সর্বস্ব শেষ হয়ে যায়। এখন স্ত্রী, সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি তাদের সহায়তায়।

চরচাপলী গ্রামের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য লায়লা রহমান রুনা জানান, অগ্নিকান্ডে তাদের লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি তাদের খাদ্য সহায়তা দিলেও জরুরী ভিত্তিতে এ পরিবারের গৃহনির্মাণে সহায়তার হাত না বাড়ালেও এ বর্ষা মৌসুমে তাদের সীমাহীন কষ্টে দিনানিপাত করতে হবে।

(এমকেআর/এএস/মে ১৮, ২০১৭)