আবু নাসের হুসাইন, স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়ীয়া গ্রামে এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত ১৫'ই মে দিবাগত রাত অনুমানিক ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গণধর্ষণের পরিবর্তে পুলিশ ধর্ষণ মামলা নিয়েছে। মামলা দেওয়ার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন ধর্ষিতার পরিবার।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, ফুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর মোল্যার ছেলে মিন্ঠু মোল্যা (৩৫), সোবাহান মোল্যার ছেলে জাহিদ মোল্যা (২৬) ও পিসনাইল গ্রামের মৃত হাতেম ফকিরের ছেলে মাইনুদ্দীন ফকির (৪০) এর সহযোগিতায় ফুলবাড়িয়া গ্রামের মান্দার মোল্যার ছেলে দিপু মোল্যা (৩২), মৃত নফেল মোল্যার ছেলে বশার মোল্যা (২৮) এবং পার্শ্ববর্তী গ্রাম পিসনাইলের আলতাফ মাতুব্বরের ছেলে রাজ্জাক মাতুব্বর (৩৫) রাত দশটার দিকে হাবিব মোল্যার বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে দেশীয় অস্ত্র রামদা এবং ছোরার মুখে জিম্মি করে এক কিশোরীকে জোর করে পার্শ্ববর্তী বাগানে নিয়ে যায়। তারপর তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে, বেহুঁশ অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। জিম্মি দশা থেকে কিশোরীর মা ছাড়া পেয়ে শোর-চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় বাগানের আম গাছের তলা থেকে উদ্ধার করে। পরের দিন ওই কিশোরীর মা উক্ত ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে সালথা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ গণ-ধর্ষণ বাদ দিয়ে ঘটনা বিকৃত করে ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করেন। ধর্ষকদের নামে মামলা রুজু হলেও ধর্ষকেরা এবং তাদের স্থানীয় দলীয় লোকজন ধর্ষিতাসহ তার পরিবারকে লাগাতার হুমকি ধামকির মুখে রেখেছে, এমনকি মামলা তুলে না আনলে পুনরায় ধর্ষণ এবং প্রাণ নাশেরও হুমকী দিয়ে যাচ্ছে বলে ভিকটিমের পরিবার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। এই প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত কোনও আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেননি পুলিশ।

বল্লভদী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, ওই কিশোরীর বাড়ি আমার বাড়ির অদূরে। ঘটনার দিন ডাক চিৎকার শুনে আমি তাদের বাড়িতে গেলে ভিকটিমের মা এবং ভিকটিমের মুখে আমি বিস্তারিত ঘটনা শুনি। পরের দিন তারা থানায় মামলা করতে যায়। বিষয়টি ধর্ষণ নাকি গণ-ধর্ষণ এটা ভিকটিম এবং পুলিশই ভালো বলতে পারবেন। মামলা হয়েছে শুনেছি, কিন্তু আসামী গ্রেফতার কেন হচ্ছেনা এ ব্যাপারে বলতে পারবো না। আসামীরা ভিকটিম ও তার পরিবারকে হুমকী দিচ্ছে বলে ভিকটিমের মা এবং প্রতিবেশীরা আমাকে জানিয়েছেন। আমি তাদেরকে পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাইতে বলেছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই লিয়াকত হোসেন বলেন, ধর্ষণ মামলার ছয় আসামীই পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সালথা থানার ওসি একেএম আমিনুল হকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

(এএনএইচ/এএস/মে ২০, ২০১৭)