শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের বেতমারী গ্রামের মুসলিম মেয়ের সাথে হিন্দু ছেলের প্রেমের ঘটনার জের ধরে হুমকি-নির্যাতনের শিকার হয়ে এলাকা ছাড়া হিন্দু পরিবারগুলোকে পুলিশ এলাকায় ফিরে যেতে বললেও তারা বাড়ি-ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছেনা। মোবাইল ফোনে হুমকি-ধামকি অব্যাহত থাকায় এলাকায় ফিরতে তাদের ভয় কাটছে না।

২২ জুন রবিবার দুপুরে শহরের গোপাল জিউর মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া লালন রবিদাস জানান, পুলিশ আমাদেরকে এলাকায় ফিরে যেতে বলছে। কিন্তু আজও আমার মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত নম্বর থেকে রিং করে এলাকায় ফিরলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমরা খুবই আতংকের মধ্যে আছি। কিভাবে এলাকায় ফিরবো বুঝতে পারছি না।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য জানান, পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম তাকে জানিয়েছেন মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু পরিবারের লোকজনের এখন বাড়ী-ঘরে ফিরতে কোন অসুবিধা নেই। তিনি জানিয়েছেন, এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হুইপ আতিউর রহমান আতিক মহোদয় এলাকার লোকজনের সাথে কথাও বলেছেন। এরপরও যদি কেউ কোন ধরনের ডিস্টার্ব করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে রবিবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে হুইপ আতিউর রহমান আতিকের সাথে এ প্রতিবেদক কথা বলেন। এসময় হুইপ আতিক জানান, বেতমারী এলাকার ঘটনাটি স্পর্শকাতর। আমি ঘটনাটি জানার পরই স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে কড়া ধমকও দিয়েছি। তারা কথা দিয়েছে, আর কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। যা কিছু হবার আইনগতভাবেই হবে। যারা ভয়ে এলাকা ছেড়ে রয়েছেন, তারা যাতে বাড়ী-ঘরে ফিরে যেতে পারে, এজন্য যা যা করা দরকার পুলিশ সে ধরনের পদক্ষেপ নেবে।

শেরপুর সদর উপজেলার বেতমারী গ্রামের উত্তরপাড়ার পুনি রবিদাসের ছেলে রতন রবিদাসের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত রশিদ মিয়ার এইচএসসি পড়–য়া মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিগত ৮ জুন মেয়েটি নিজেই গার্মেন্ট কর্মী রতন রবিদাসের কাছে চলে যায়। বর্তমান প্রেমিক-প্রেমিকা দুজনকেই জেলা কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে। হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের এ প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় হামলা ও হুমকির শিকার ১২০ হিন্দু পরিবার বাড়ী-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। তন্মধ্যে ২৫ পরিবারের শিশুসহ নারী-পুরুষরা ভয়ে আতঙ্কে শেরপুর গোপাল জিউর মন্দিরে আশ্রয় নেয়।
(এইচবি/এএস/জুন ২২, ২০১৪)