মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কারিকরপাড়া এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় জনগণ। সোমবার দুপুরে তারা সিডিউল অনুযায়ী ওই রাস্তার কাজ করার দাবীতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় তারা ওই প্রজেক্টের সাথে জড়িত ইঞ্জিনিয়ার এর বিরুদ্ধে সিডিউলের বাইরে গিয়ে ঠিকাদারের স্বার্থে নিম্ন মানের কাজকে সাফাই গাওয়ার অভিযোগ তোলেন।
   

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা বাকি ইমাম, এনামুল করিম খোকন, সিদ্দিকুর রহমানসহ এলাকাবাসি অভিযোগ করেন- প্রায় ৬৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ৭৭১ মিটার লম্বা ওই রাস্তাটি নির্মাণে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী, সিডিউল অনুযায়ী রুলার ব্যবহার করে বালিতে প্রয়োজনীয় কমপ্রেসন (বালু জমাট করা) না করে পুরাতন ময়লা বালি, ২০ বছরের পুরাতন ব্যবহৃত খোয়া ব্যবহারসহ নানা অভিযোগে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতি চলছে। এসব বিষয়ে গতকাল সোমবার এলাকাবাসি অভিযোগ জানালে প্রোজেক্টের ইঞ্জিনিয়ার রওনক হাসান ঠিকাদারে কাজের সমর্থনে সাফাই গাইতে থাকেন। অথচ এর পরপরই এলাকাবাসির চাপে তার উপস্থিতিতেই ওই কাজের খোয়া ও বালির অনুপাত পরিক্ষা করলে দেখা যায় সেখানে ১:১ (১ঝড়ি বালুতে এক ঝুড়ি খোয়া) দেয়ার কথা থাকলেও ১:২ (এক ঝুড়ি খোয়া দুই ঝুড়ি বালু) পরিমানে খোয়া-বালু ব্যবহার করেছে। রাস্তার পাশের ইটের গাথুনিতে ব্যবহৃত বালু সিমেন্টের অনুপাত নিয়ে এলাকাবাসি প্রশ্ন তোলেন। সরেজমিনে ওই বালি হাতে নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার নিজেই সকলের সামনে স্বীকার করেন গাথুনিতে ৩:১ (তিন বস্তা বালুতে ১ বস্তা সিমেন্ট) সিমেন্ট ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র ৮:১ অথবা তার চেয়েও কম। অথচ এসব ব্যাপার তিনি মুখে স্বীকার করলেও ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। এছাড়া রাস্তায় খুবই নিম্ন মানের খোয়া, বালু ব্যবহার ও রাস্তার চওড়া সিডিউল অনুযায়ী তৈরী হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। এ সময় তারা রোলার নিয়ে এসে সঠিক নিয়মে রাস্তা তৈরী না করা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেন।

ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম জানান- তিনি সঠিকভাবেই রাস্তাটির কাজ করতে চান। তবে সঠিক সময়ে রোলার না পেয়ে তিনি শুধু পানি দিয়েই রাস্তার কমপ্রেশনের কাজ করা যাবে যেনে সেভাবেই কাজ করছেন। তবে এলাকাবাসির অভিযোগের পর বিকালে তিনি একটি রোলার ওই রাস্তার কাজের এলাকায় নেন। কিন্তু পানি দিয়ে বালু ভেজানোর কারণে ওই বালুতে রুলার চালানো যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে প্রোজেক্টের ইঞ্জিনিয়ার রওনক হাসান জানান- সিডিউলে রোলার করার কথা থাকলেও তিনি নিজ ইঞ্জিনিয়ারিং বুদ্ধিতে পানি দিয়ে কমপ্রেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে রাস্তার কাজ যেন মান বজায় রেখে করা হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(ডিসি/এএস/মে ৩০, ২০১৭)