বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানে পাহাড় ধসের পৃথক তিনটি ঘটনায় ৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ভোর রাতে প্রবল বর্ষনের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে ৩ দিনের টানা বর্ষনের কারণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির মারাত্বক  অবনতি হয়েছে। এতে জেলার ৩৩টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ২৫টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। বন্যার কারণে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে আছে। এদিকে পাহাড় ধ্বস ও সড়কের উপর বন্যার পানি জমে যাওয়ায় বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পাহাড় ধবসে রাত ৩টায় লেমুঝিরি ভিতর পাড়ায় একই পরিবারের ৩ শিশুর মমান্তিক মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন সুমন বড়ুয়ার সন্তান শুভ বড়–য়া (৮) মিতু বড়ুয়া (৬) লতা বড়ুয়া (৫) মারা যায়। স্থানীয় লোকজন তাদের নিহত শিশুদের মরদেহ উদ্ধার করে।

অপর পাহাড় ধসের ঘটনায় কালাঘাটা এলাকায় রেভা ত্রিপুরা (১৯) নামে বান্দরবান সরকারী কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু হয়। এ সময় আহত হয় আরো ৪ জন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভোর ৪টায় মাটির নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে।

এ ছাড়াও লেমুঝিরি আগা পাড়ায় পাহাড় ধসে মা-মেয়ে নিখোজ রয়েছে। তারা হলেন কামরুন নাহার (২৭) সুকিয়া আক্তার (৮)। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা তাদের লাশ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পারিচালক তারিকুল ইসলাম জানান, পাহাড় ধসে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধসে পড়া মাটি নরম হওয়ার কারণে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তার পরও উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক জানালেন, প্রবল বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজনের লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। নানা সমস্যার কারণে মা-মেয়ের লাশ মাটি চাপা পড়ে আছে। ফয়ার সার্ভিস রাত থেকে চেষ্টা করছে। নরম মাটির কারণে লাশ তোলা সম্ভব হচ্ছে না। লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠছে। একেবারে বিচ্ছিন্ন ভাবে যারা বসবাস করছে তারা এ ধরনের দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে। অনেক গুলো আশ্রয়ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। সারা দেশের সাথে বান্দরবানে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো জানান, দুর্গত মানুষের ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর জন্য তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। দ্রæত ত্রাণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

(এএফবি/এসপি/জুন ১৩, ২০১৭)