শেরপুর প্রতিনিধি : প্রশাসনের আশ্বাস ও পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের ভরসা পেয়ে আস্তে আস্তে বাড়ী-ঘরে ফিরতে শুরু করেছে শেরপুরের বেতমারী গ্রামের হিন্দু পরিবারের লোকজন। ২৩ জুন সোমবার সকালে শেরপুর গোপাল জিউর মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া ২৫ টি পরিবারের মধ্যে ১৮ টি পরিবারের কয়েকজন পুরুষ সদস্য নিজেদের বাড়ীঘরে ফিরে গেছে।

তবে এখনও তাদের মাঝে ভয়-আতংক কাটেনি। কিছু কিছু পরিবারের লোকজন এলাকায় ফিরে গেলেও অনেক পরিবারে সদস্যরা এখনও শেরপুর ও জামালপুর জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়-পরিজনের বাসায় অবস্থান করছেন।
সদর উপজেলার গাজীরখামার গ্রামে আশ্রয় নেওয়া তুফানু রবিদাস বলেন, পুলিশ এবং নেতারাতো এলাকায় ফির যেতে বলেছেন। কিন্তু কিভাবে এলাকায় ফিরে যাবো। ওনারা বলছেন কেউ আমাদের ওপর হামলা-নির্যাতন করবে না। কিন্তু রবিবর রাত যারা এলাকায় ফিরে গেছে, তারাতো বাড়ী থেকে বের হতে পারছে না। হুমকি-ধামকি চলছেই। জামালপুর শহরে আত্মীয়ের বাড়ীতে আশ্রয় কৃষ্ণ রবিদাস বলেন, যারা এলাকায় ফিরেছে, তারা বাড়ীর বাইরে বের হতে পারছে না। দু’একজনকে বাজারে দেখে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তোরা কেন এলাকায় ফিরেছিস। যার কারণে বউ-পুলাপান নিয়ে এলাকায় ফিরতে সাহস হচ্ছেনা।
শেরপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য জানান, হুইপ আতিক ও পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করায় মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বাড়ী-ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে অনেকের মাঝেই এখনও ভয়-আতংক বিরাজ করছে। সদর থানার ওসি মাজহারুল করিম বলেন, বেতমারী এলাকায় এখন শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যারা বাড়ী-ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিলো তারা এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
শেরপুরের বেতমারী গ্রামের ইন্টামিডিয়েট পরীক্ষার্থী মুসলিম মেয়ের সাথে গার্মেন্ট কর্মী হিন্দু ছেলের প্রেমের ঘটনার জের ধরে এলাকায় হামলা ও হুমকির শিকার ১২০ হিন্দু পরিবার গত ১৬ জুন থেকে বাড়ী-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। তন্মধ্যে ২৫ পরিবারের শিশুসহ নারী-পুরুষরা ভয়ে আতঙ্কে শেরপুর গোপাল জিউর মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিল। বর্তমান প্রেমিক-প্রেমিকা দুজনই জেলা কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে।
(এইচবি/এএস/জুন ২৩, ২০১৪)