গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কার্মকর্তা ও করারক্ষীদের রেশনের গম বিক্রির উদ্দেশ্যে নেয়ার সময় মো. সেলিম মিয়া নামে এক পিকআপ চালককে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সালনা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোসেন সরকার জানান, কাশিমপুর কারাগার থেকে পিকআপে করে গম পাচার হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে ৬৮ বস্তায় প্রায় সাড়ে তিন টন গমসহ ওই পিকআপটি আটক করা হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, কারাগারের কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের প্রতিমাসে রেশন প্রদান করা হয়। ওই রেশন থেকে অনেকে গম বা অন্য সামগ্রী বিক্রি করে চাউল বা অন্য সামগ্রী ক্রয় করে থাকেন। কারাগারের এক কারারক্ষী তা ক্রয় করে বাইরে কোথাও বিক্রি করে দিয়েছেন। শনিবার গমগুলো কারাগারের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় সালনা হাইওয়ে পুলিশ পিকআপ ভর্তি গমগুলো আটক করে।

আটক পিকআপ চালক সেলিম মিয়া জানান, কাশিমপুর কারাগারের কারারক্ষী মো. রুকন উজ্জামান গমগুলো টঙ্গীর ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্লার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য তার পিকআপটি ভাড়া নিয়েছিলেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর কারারক্ষী মো. রুকন উজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, এ কারা কমপ্লেক্সের চারটি কারাগারের জেল সুপার, জেলার, সুবেদার, সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট স্টাফরা প্রতিমাসে চাল, ডাল, চিনি, গম, তেল রেশন হিসেবে পান। তাদের অনেকেই নিজেদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত এসব পণ্য বিক্রি করে দেন। আমি বাহক হিসেবে বাইরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে ওইসব মালামাল বিক্রি করে দেই। শনিবার রেশনের এমন বিক্রিত সাড়ে তিনটন গম পিকআপযোগে টঙ্গীর ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্লার কাছে পাঠানো হচ্ছিল।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, গমগুলো উদ্ধারের পর জয়দেবপুর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহমুদ হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জয়দেবপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, হাইওয়ে পুলিশের আটক করা পিকআপ ভর্তি গমগুলো জয়দেবপুর থানায় রয়েছে। রোববার দুপুর পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় কোনো মামলা হয়নি।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৯, ২০১৭)