গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে আনোয়ার হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে আটক করে সালিশের মাধ্যমে জুতার মালা পরিয়ে ঘুরিয়েছে গ্রামবাসী। পরে তাকে বেত্রাঘাত করে বিচার শেষ করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মাতব্বররা।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে।

এলাকাবাসী ও স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার সময় প্রায়ই নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল আনোয়ার হোসেন। গত রোববার স্কুল থেকে ফেরার পথে ফের আনোয়ার মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করলে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলামের নির্দেশে রোববার রাতেই আনোয়ার হোসেনকে আটক করে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সোমবার বেলা ১১টায় ইউনিয়নের নয়াপাড়া বাজারে গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশে ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, ইউপি সদস্যা মিজানুর রহমান, স্থানীয় মাতব্বার আব্দুল আওয়ালসহ গ্রামের বেশ কয়েকজন মাতব্বর উপস্থিত ছিলেন।

ওই সালিশে দোষী সাব্যস্ত করে আনোয়ার হোসেনকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে বেত্রাঘাত করতে করতে কান ধরে গ্রামের রাস্তায় ঘোরানো হয়। পরে শাস্তিস্বরূপ অভিযুক্তের ৯ শতাংশ জমি ওই স্কুলছাত্রীর নামে লিখে নেয়া হয়।

গ্রামবাসীদের কয়েকজন জানান, স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের বিচার গ্রাম্য সালিশে না করে পুলিশকে অবহিত করা উচিত ছিল। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মাতব্বররা তা না করে নিজেরাই বিচার করেছেন। ৎ

এ বিষয়ে অভিযুক্তের ভাই সানোয়ার হোসেন জানান, তার ভাইকে একটি মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে ধরে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় গলায় জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানো হয়েছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বলেন, ওই ছাত্রী তার নানার কাছে থেকে পালিত হচ্ছে। বাবা বহু আগেই তার মাকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন। পরে তার মাও বিয়ে করে সংসার করছে। অসহায় মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়েছে। জরিমানা হিসেবে আনোয়ার ৯ শতাংশ জমি মেয়েটির নামে লিখে দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, এই বিষয়ে কেউ থানায় জানায়নি। সোমবার রাত ৯টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৫, ২০১৭)