মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : বন্যায় বিপর্যস্থ হয়ে ভারি বৃষ্টির কারনে দেশের বিভিন্ন রাস্তা ঘাটের বেহাল দশার ছবি কিংবা সংবাদ প্রায় প্রতিদিনই প্রকাশ হচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে চলছেনা যানবাহন। বন্যার পানিতে এখনো তলিয়ে গেছে মহাসড়কে বিভিন্ন স্থান । কোথাও আবার দেখো যাচ্ছে বাঁশের সাঁকো। বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়া স্থান গুলো পারাপারের একমাত্র ভরসা সাঁকো কিংবা ট্রাক।

হাকালুকি হাওর তীরবর্তী উপজেলা হচ্ছে কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা। এই তিন উপজেলা আঞ্চলিক মহাসড়কের এমন বেহাল অবস্থা। সড়ক গুলোর বারবার বানের পানিতে তলিয়েই এমন বড় ধরনের দূর্ভোগ। হাকালুকি হাওর তীরবর্তী কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার ছোট বড় সড়ক গুলোর এখন এমন নাজুক অবস্থা। পানিতে তলিয়ে থাকা অনেক সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় তিন উপজেলার মানুষের দূর্ভোগের অন্তনেই। এখনো অনেক জায়গায় সড়কের উপর সৃষ্ট গর্তে পানি থাকায় চলার পথে গাড়ি চালক ও পথচারিরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। বানের পানি চলে গেলে দ্রুত সংস্কার না হলে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো বাড়বে এবং ওই সড়ক পথের পথচারীরা ভোগীরা আরো দূর্ভোগ পড়বেন বলে জানান স্থানীয়রা।

সরজমিনে গিয়ে মহাসড়কের এমন চিত্র চোখে পড়ে। মৌলভীবাজার থেকে বড়লেখা যাওয়ার পথে কুলাউড়া শহর পাড়ি দিলে দেখা মিলে সড়কের এমন বেহাল দশা। কুলাউড়া থেকে বড়লেখা যাওয়ার পথে ছোট বড় অন্তত ২৫-৩০টি স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম হাতলিয়া এলাকায় ৪টি স্থানে বন্যার পানি উঠার কারণে সড়কের বিভিন্ন যায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই সড়কের পথচারীদের কাছ থেকে অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক পানিতে নিমজ্জিত থাকার অজুহাতে প্রায় ২ মাস যাবত গর্ত ভরাটের কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে যাত্রীরা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এসব সড়কে।

তবে স্থানীয়রা দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে সড়কের ডুবে যাওয়া অংশ পারাপারের জন্য সড়কের পাশে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছেন। জানা যায়, প্রায় ২ মাস থেকে কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম হাতলিয়ার ৪ স্থানসহ সড়কের ১৫টি স্থান দুই-তিন ফুট পানিতে ডুবন্ত রয়েছে। প্রায় ২ মাস যাবত বন্যার পানি থাকায় সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি মারাত্মুক ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে সড়কের এমন বেহাল দশায় যান চলাচলও স্বাভাবিক হচ্ছে না। ঝুঁকি নিয়ে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও যাত্রীদের স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।

এছাড়া ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারসহ কিছু বড় যানবাহন চলাচল করছে। অনেক যানবাহন পানি আর বড় বড় গর্তের মধ্যে সড়কে চলতে গিয়ে বিকল হচ্ছে। এ রকম অনেক দূর্ঘটনাও ঘটছে। এ নিয়ে অনেক সময় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গাড়ি চালকরা জানান অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ওই স্থানগুলো পারাপার হচ্ছেন। তারা জানান জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক পথটির এমন বেহাল দশার কারনে এখন সরাসরি যোগাযোগ অনেকটাই বন্ধ রয়েছে। তাদের দাবী এই আঞ্চলিক সড়ক পথের যাত্রীরা চরম দূর্ভোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত সংস্কারের পদক্ষেপ নেন।

স্থানীয় বাসিন্ধারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলা স্বাভাবিক হচ্ছে না। ডুবে যাওয়া অংশ পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়াও দিতে হচ্ছে। এজন্য জনদুর্ভোগ লাঘবে এলাকার কয়েকজন সড়কের পাশে বাঁশের সাকোঁটি তৈরী করে দিয়েছেন। এখন বানের পানিতে ডুবে থাকা ওই অংশ অনেকটাই ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেব নাথ জানান, আমরা ওই সড়কের ১০টি স্থান বন্যার পানিতে বড় ধরনের ক্ষতি এবং ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তা সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বরাদ্ধ পেলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।


(একে/এসপি/জুলাই ২৬, ২০১৭)