গাইবান্ধা প্রতিনিধি : স্ত্রী লাবণী সাহাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গাইবান্ধার সদর থানার এসআই দেবাশিষ সাহা ও তার মামা পুণ্য চন্দ্র সাহাকে গ্রেফতার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। গত শনিবার (১২ আগস্ট) রাতে সদর থানা থেকে দেবাশীষকে এবং তার মামা পুণ্য চন্দ্র সাহাকে শহরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকালে লাবণী সাহাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ এনে নিহতের বাবা গোবিন্দ চন্দ্র সাহা জামাই দেবাশিষ সাহাসহ ৬ জনকে আসামি করে গাইবান্ধার বোনারপাড়া রেলওয়ে থানায় একটি মামলা করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ৩ মার্চ লাবণীর সাথে কুড়িগ্রামের বৈরাগীপাড়া এলাকার দেবাশিষের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় দেবাশিষ ঢাকায় সিআইডিতে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি বদলি হয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় আসেন। লাবনীকে নিয়ে জেলার শহরের হাসপাতাল লেনের মাস্টারপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় উঠে।

এছাড়া দেবাশিষ যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো তখন সুন্দরগঞ্জের ধোপাডাঙ্গা এলাকার সুইটি নামে এক তরুণীর সাথে তার পরিচয় হলে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। কিন্তু দেবাশিষ বিষয়টি গোপন করে লাবণীকে বিয়ে করে। একপর্যায়ে লাবণী ওই প্রেমের বিষয়টি জেনে গেলে দেবাশিষ তাকে নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার সকালে ১০ আগস্ট দেবাশিষ লাবণীকে মারপিট করে। পরে বাসায় লাবণীকে রেখে দরজায় তালা দিয়ে চলে যায় দেবাশিষ।

বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) সকালে ঘটনার পর দুপুরে লাবণী মোবাইল ফোনে তার এক আত্মীয়কে ডেকে ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তালা খুলে ঘর থেকে বের হন। পরে তারা চলে গেলে লাবণী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ লাবণীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে গাইবান্ধা পৌর শশ্মানে তার সৎকার করা হয়। এ ঘটনায় জিআরপি থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়।

রেলওয়ে থানার গাইবান্ধার বোনারপাড়া থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, লাবণীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে তার বাবা গোবিন্দ চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে দেবাশিষসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার পর দেবাশীষ ও তার মামাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


(এইচআইবি/এসপি/আগস্ট ১৩, ২০১৭)