স্টাফ রিপোর্টার : আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা স্বর্ণ কেন ফেরত দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের তলবি নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি এম ফারুক সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি শেষে এ রুল জারি করেন।

আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুমে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা প্রায় সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ এবং সাত হাজার ৩৬৯ পিস হীরার অলংকার গত ৫ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা দেয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এসবের মূল্য প্রায় ২১৯ কোটি ১০ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের ৫টি শো-রুমে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১৩ মষ স্বর্ণ ও ৭ হাজার ৩৬৯ পিস হীরার অলংকার সাময়িকভাবে জব্দ করেন। এসব অলংকার মজুদের বিষয়ে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা দিতে না পারায় তা চোরাচালান হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে।

ফলে আপন জুয়েলার্স থেকে জব্দ করা ২১৯ কোটি ১০ লাখ ২৭ হাজার টাকা মূল্যের মোট সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণালংকার এবং আনুমানিক ১০ কোটি টাকার ৭ হাজার ৩৬৯ পিস হীরার অলংকার আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া হয়।

স্বর্ণ জব্দ ও বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থানান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ, র‌্যাব, ভ্যাট কমিশনার, কাস্টম হাউসের প্রতিনিধিরা। এছাড়া বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) নেতারা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে বলে অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়- এমন অভিযোগ এনে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী দুই তরুণী। মামলায় অভিযুক্ত একজন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার হোসেনের ছেলে সাফাত আহমেদ। সাফাতসহ পাঁচ আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

ওই ঘটনার পর আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ‘অবৈধ সম্পদ’ খুঁজতে তার প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। এছাড়া বিভিন্ন মহল থেকে আপন জুয়েলার্স বর্জনেরও দাবি ওঠে।

শুল্ক গোয়েন্দারা গত ১৪ ও ১৫ মে আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের পাঁচটি শো-রুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৯ গ্রাম হীরা ব্যাখ্যাহীনভাবে সাময়িকভাবে জব্দ করে। এগুলো পরে আইনিভাবে প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় দেয়া হয়।

আত্মপক্ষ সমর্থনে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে ৩ বার সুযোগ দিলেও তারা কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২২, ২০১৭)