স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সম্পর্ক বরাবরই খুব ভালো ছিল, আর তা অব্যাহত থাকবে। পদ্মা ইস্যুর কারণে সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।

জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘যে খাতগুলোতে উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে সেগুলোতে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতার সুযোগ থাকলে বাংলাদেশের পাশে থেকে দেশের উন্নয়নে সংস্থাটি অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করবে।

বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাংবাদিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের সদরদপ্তরে গত বুধবার এই সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রসঙ্গে কিম জানান, এই একটি প্রকল্পই ছিল যা নিয়ে বিশ্বব্যাংক বেশ সমস্যায় পড়েছিল বিধায় এই ব্যাপারে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে সংস্থাটি সম্মত হয়নি।

তিনি বলেন, “কিন্তু এমন বিতর্কিত প্রকল্প কেবল এই একটিই। একই সময়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের আরো অনেক প্রকল্পের কাজ চলছিল”।

বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ২.৭ বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর করার বিষয়ে সম্প্রতিই একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে বিশ্বব্যাংক।”

তবে দুর্নীতির প্রশ্নে অবশ্যই বিশ্বব্যাংক সবসময় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করবে বলেও জানান তিনি। এক্ষেত্রে দেশের সরকার কিংবা সুসম্পর্কের বিষয় বা অন্য কিছুই বিবেচ্য হবে না।

তিনি বলেন, “তবে দুর্নীতি নিয়ে কোনো সমস্যা হলেই যে আমরা সব ধরনের সম্পর্কই ভেঙে দেব, বিষয়টি তাও নয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকেই উদাহরণ হিসেবে নেয়া যেতে পারে।”

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১.২ বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ দেয়ার কথা থাকলেও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অন্যতম ব্যক্তি সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে ঋণদানের সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। আর বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করে প্রকল্পটির অন্যান্য ঋণদাতা সংস্থাগুলো এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং জিকাও এই প্রকল্পে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য কানাডাভিত্তিক সংস্থা এসএনসি লাভালিনকে উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করার বিষয়ে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক।

কিন্তু দেশটিতে দারিদ্র্যসীমা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে পরবর্তীতে গৃহীত অন্যান্য নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারসহ অন্য সবগুলো পক্ষের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ থেকে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব।”


(ওএস/এটি/ এপ্রিল ১১, ২০১৪)