E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এলজিইডি’র খুলনা জোনের চার জেলায় উন্নয়ন কাজে অচলাবস্থা

২০১৭ ডিসেম্বর ০৩ ১৫:৩২:৪৭
এলজিইডি’র খুলনা জোনের চার জেলায় উন্নয়ন কাজে অচলাবস্থা

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : দক্ষিণাঞ্চলের ৪ জেলা বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও নড়াইলে সরকারের এলজিইডি বিভাগের গ্রামীন সড়ক ও কালভার্টসহ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে নিার্মান সামগ্রীর উচ্চমূল্যের পাশাপাশি পার্শবর্ত্তী গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুর জেলা থেকে এলজিইডি’র খুলনা জোনের এই চার জেলায় উন্নয়ন কাজের ‘রেট সিডিউল’ ১৫ থেকে ২০ ভাগ কম থাকায় সরকারের উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদাররা চরম লোকসানে পড়েছেন। এই অবস্থায় এলজিইডি’র রেট সিডিউল পরিবর্তনের দাবীতে বাগেরহাটসহ এই জোনের ৪ জেলায় কয়েক হাজার ঠিকাদার আন্দোলনে মাঠে নেমেছে।

বাগেরহাট এলজিইডি ঠিকাদার কল্যান সমিতি রবিবার সকালে এলজিইডি’র রেড সিডিউল পরিবর্তনের দাবীতে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে কয়েক শত ঠিকাদার অংশ নেন। পরে তারা দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।

মানববন্ধনে তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা গ্রামীন রাস্তাঘাট, অবকাঠামো নির্মান করে সরকারের উন্নয়ন কাজে ঠিকাদাররা অবদান রেখে চলেছেন। এই ঠিকাদারি করে আমাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। অথচ সরকারের এই উন্নয়ন কাজে এলজিইডি বিভাগ নির্মান সামগ্রীর যে দাম নির্ধারণ করে দরপত্র আহ্বান করেছে তার সাথে বর্তমান বাজার দরের সাথে অসংগতিপূর্ণ।

নির্মান সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এই বাজার দরে যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে তা বাস্তবায়ন করে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী জেলা গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুরের সাথে দরপত্রে দাম বৈষাম্যমুলক হওয়ায় বাগেরহাট ঠিকাদাররা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছে। এলজিইডি’র উপজেলা ও জেলা অফিস থেকে কর্মকর্তাদের পাঠানো কোন রেট সিডিউলের কোন গুরুত্ব দেননি এলজিইডি’র খুলনার তত্ববধায়ক প্রকৌশলী (এসি) আফজালসহ কতিপয় কর্মকর্তা।

সরকার বিরোধী এসব কর্মকর্তা পার্শবর্ত্তী গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুর জেলা থেকে এলজিইডি’র খুলনা জোনের এই চার জেলায় উন্নয়ন কাজের ‘রেট সিডিউল’ ১৫ থেকে ২০ ভাগ কম করে পরিকল্পিত ভাবে সরকারের উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ করছে। খুলনা জোনের এই চার জেলায় উন্নয়ন কাজের রেট সিডিউল বর্তমান বাজার মূল্য ১৫ থেকে ২০ ভাগ বেশী থাকায় এলজিইডি’র গ্রামীন সড়ক ও কালভার্টসহ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের টেন্ডারে ঠিকাদাররা অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকছে।

এত করে সরকারের উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বর্তমানে বেঁধে দেওয়া নির্মান সামগ্রীর দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির নেতারা। তাদের এই দাবি মেনে না নিলে ভবিষ্যতে এলজিইডি’র আহ্বান করা দরপত্রে অংশগ্রহণ না নেওয়ার হুমকি দেন ঠিকাদার কল্যাণ সমিতি। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সমিতির আহ্বাবায়ক খান আবু বক্কর সিদ্দিক, সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান, সদস্য সচিব মো. আব্দুর রব সরদারসহ ঠিকাদার কল্যান সমিতির নেতারা।

দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জেলা এলজিইডি ঠিকাদার কল্যান সমিতির আহবায়ক খান আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, খুলনা জোনের ৪ জেলা বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও নড়াইলে সরকারের এলজিইডি বিভাগের রেট সিডিউলে একটি ইটের মূল্য ৮ টাকা ৭৫ পয়সা, বর্তমান বাজার মূল্যে ঠিকাদারদের প্রতিটি ইট কিনতে হচ্ছে ১১ টাকায়।

প্রতি ঘনফুট ইটের খোয়ার রেট ৮৪ টাকা হলেও কিনতে হচ্ছে ১০০ টাকায়। এভাবে এলজিইডি’র রেট থেকেও পাথর চিপস, বিটুমিন অনেক উচ্চ মূল্যে কিনতে হচ্ছে। পার্শবর্ত্তী গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুর জেলা থেকে এলজিইডি’র নির্মান সামগ্রীর সিডিউল রেট ভালো থাকলেও খুলনার তত্ববধায়ক প্রকৌশলীসহ কতিপয় কর্মকর্তার নিম্ন রেট সিডিউল নির্ধারনের কারনে এই জোনের ঠিকাদাররা কাজ করতে গিয়ে চরম লোকসানে পড়ছে। সংবাদ সম্মেলনে সরকারের উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত না করতে খুলনা জোনে এলজিইডি’র রেড সিডিউল পার্শবর্ত্তী গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুর জেলার ন্যায় নির্ধারনের দাবী জানানো হয়। দ্রুত এই জোনের রেট সিডিউল না বাড়ালে ঠিকাদাররা এলজিইডি’র কোন কাজের টেন্ডারের অংশ গ্রহন করবে না বলেও সংবাদ সম্মেলনে ঘোষনা দেয়া হয়।

(এসএকে/এসপি/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test