E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে মনি

২০১৮ জানুয়ারি ২৯ ১৫:১৯:৩৭
প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে মনি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কাটিয়ার  কুখ্যাত সোনা চোরাচালানি শফিউল্লাহ মনির সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচারের প্রতিবাদ, সস্ত্রাসী দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দখল করে নেওয়া বাড়ি ও লুটপাটকৃত মালামাল ফিরে পাওয়াসহ জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শহরতলীর মাগুরা দাসপাড়ার শম্পা পাল।

সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শম্পা পাল বলেন, তার স্বামী মিলন পাল দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সাতক্ষীরার স্বনামধন্য স্বর্ণ শিল্পী ও ব্যবসায়ি হিসেবে পরিচিত। স্বামী–স্ত্রীর যৌথ নামীয় শহরতলীর মাগুরা দাসপাড়ার বাড়ি ও পুকুর হস্তান্তরের জন্য তারা কারো সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন নাই।

অপরদিকে কাটিয়া দক্ষিণপাড়ার স্বর্ণ চোরাচালানি ও মাফিয়া ডন শফিউল্লাহ মনি (৩৮), ভারতে সোনা ও ভারত থেকে থ্রি-পিচসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র পাচারের জন্য বেনাপোল থেকে সুন্দরবন সীমান্তকে চোরাচালানি রুট হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে। তার ভাই মাসুম বিল্লাহ শাহীন পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও একাধিক নাশকতা মামলার আসামি। কয়েক বছর আগে পুলিশের হাতে ধরা পড়া সোনার দায় মনি তার এক নিরীহ ভ্যানচালকের ছেলে কর্মচারির উপর চাপিয়ে দিয়ে তাকে দীর্ঘদিন জেল খাটায় ।

দুই বছর আগে ব্যবসার ফাঁদে ফেলে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে দে ব্রাদার্স এর মালিক আশুতোষ দে কে ভারতে চলে যেতে বাধ্য করে মনি। মনির অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়াতে রাজী না হওয়ায় ও মাগুরা দাসপাড়ার বাড়ি মনির কাছে বিক্রি করতে রাজী না হওয়ায় প্রায় এক বছর আগে তলুইগাছা সীমান্তে মনির প্রায় ১৬ কেজি সোনা আটক হওয়ার ঘটনায় বিজিবির দায়েরকৃত মামলায় নাম না থাকলেও মনি প্রভাব খাটিয়ে মিলনকে গ্রেফতার করায়।

একইভাবে মনি বেনাপোলে একটি সোনা পাচার মামলায় মিলনকে গ্রেফতার করায়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর মনির শ্যালক উজ্জ্বল ৩৩ পিচ সোনার বারসহ ঢাকার কেরানীগঞ্জে আটক হয়। ওই মামলায় ও মিলনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে মনি। কয়েকমাস আগে শহরের কপোতাক্ষ ফিলিং স্টেশনের পাশে এক নারীর কাছ থেকে হাসান বাহিনী দিয়ে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ডায়মণ্ড সেট ছিনতাই করায় মনি। এতেও ফাকায় অবস্থানকারি মিলনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। তাতেও সুবিধা না করতে পেরে আমাদেরকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করানোর জন্য গত ১৯ জানুয়ারি রাতে দাসপাড়ার বাড়িতে মনির নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এসময় মান্নানসহ কয়েকজনকে মারপিট করে মিলনকে দিয়ে জোরপূর্বক সাক্ষর করিয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের চেক, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র , সোনার গহনা ও টাকা লুটপাট করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, তারা বাড়িতে না থাকার সুযোগে মনির নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা গত ২০ জানুয়ারি সকালে তাদের মাগুরা দাসপাড়ার বাড়ির দখল নিয়েধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য মনির নেতৃত্বে ঘরের মধ্যে থাকা কৃষ্ণ, সরস্বতী ও লক্ষীর মুর্তি ভাঙচুর করে বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে দেয়। অথচ জমি হস্তান্তর সংক্রান্ত কোন চুক্তিপত্র না থাকলেও মিলন তার ব্যাংক থেকে তার মালিক ঢাকার আলম এন্টারপ্রাইজ ও নীলা মমতাজ এন্টারপ্রাইজের হিসাব নম্বরে ব্যবসা ও জমি কেনার জন্য তিন মাস আগে টাকা স্থানান্তর সম্পর্কিত কাগজপত্র দেখিয়ে মিলনকে টাকা দেওয়ার গল্প ফেঁদে আদালতে দায়েরকৃত মামলার নথিতে জমা দিয়েছে।

এমনকি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি জবরদখল করতে মরিয়া মনির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তার মত নিরীহ গৃহবধূকে জড়িয়ে তার নারকেলতলা মোটর সাইকেলের শোরুমে ভাঙচুর ও লুটপাট সংক্রান্ত কাল্পনিক কথা উল্লেখ করে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের সামাজিক সম্মান নষ্ট করার জন্য গত ২৭ জানুয়ারি প্রেসক্লাবে মনি সংবাদ সম্মেলন করেছে। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

সাত মাস আগে মারা যাওয়া তার দাদাশ্বশুর ক্ষিতিশ পালকে নিয়ে মিলন গত ১৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাগুরা দাস পাড়ায় গিয়েছিল ও ক্ষিতিশ পালকে মিলনের বাবা উল্লেখ করে ওই রাতে জমি রেজিষ্ট্রি সংক্রান্ত কথাবার্তা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করায় মনির মিথ্যাচার জনসমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সংবাদ সস্মেলনের মাধ্যমে শফিউল্লাহ মনি ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের জবরদখলে রাখা বসতবাড়ি ও ব্যাংকের চেকসহ কাগজপত্র ফিরে পাওয়া, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ তার পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা ও মনিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শম্পা পালের মাসির ছেলে পলাশ পাল।

এদিকে শফিউল্লাহ মনি কারো ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিতে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টাকা নিয়ে জমি লিখে না দিলে দখল করা ছাড়া আর উপায় কি?

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test