E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে চড়া দামে ইলিশ বিত্রিু 

২০১৮ এপ্রিল ১২ ১৬:২৪:১৯
বাগেরহাটে চড়া দামে ইলিশ বিত্রিু 

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছেনা পর্যাপ্ত ইলিশ। একই সাথে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরাও যাচ্ছেনা মাছ ধরতে। তাই বাগেরহাটে এবার মজুদকৃত ইলিশ মাছ দিয়েই পহেলা বৈশাখে চাহিদা মেটাচ্ছেন মৎস্য আড়তদারসহ পাইকারী ব্যবসায়ীরা। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মজুদকৃত ইলিশ। প্রতি বারের মত এবারও পহেলা বৈশাখে বাগেরহাটের বেশির ভাগ মানুষই পান্তা-ইলিশ খেতে আগ্রহী। আর এ সুযোগটাই নেন ব্যবসায়ীরা। পহেলা বৈশাখের ইলিশের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে দাম। স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভ করতে ব্যবসায়ীরা মজুদ করেন ইলিশ। আর পহেলা বৈশাখের দু’এক দিন আগে থেকেই এসব মাছ ছাড়া হয় বাজারে।

বৃহস্পতিবার সকালে বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য আড়ত কেবি বাজারে গিয়ে আড়তদার ও পাইকার বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৬টা থেকে কেবি বাজার মৎস্য আড়তে শুরু হয় মাছ কেনা বেচা। প্রায় দুই ঘন্টা ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাক ডাকের মধ্য দিয়ে শেষ হয় কেবি বাজারের মাছ কেনা বেচা। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত এই পাইকারি মাছ বিক্রির ঐতিহ্যবাহি বাজার এটি। খুলনা, গোপালগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে খুচরা বিক্রেতা আসেন এখানে মাছ কিনতে। প্রতিদিনই প্রায় কয়েক টন ইলিশ বিক্রি হয় এ বাজারে।

পাইকারি মাছ বিক্রির পুরাতন বাজার হলেও এবারের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে কেবি বাজারে ইলিশ বোঝাই করে সাগর থেকে নতুন করে ভিড়ছে না কোন ট্রলার। মূলত সাগার ও নদী এসময় উত্তাল থাকার কারনে জেলেরা নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে এসময়টাকেই তাদের মাছ ধরার উপকরন জাল ও ট্রলার মেরামতের উপযুক্ত সময় হিসাবে বেছে নেয়। আর এ কারনে সাগরে মাছ থাকলেও জীবনের ঝুকি নিয়ে সাগরে নেই জেলেরা। বছরের সবথেকে বেশী দাম ও চাহিদা থাকা সত্বেও পহেলা বৈশাখে কোল্ড স্টোরে মজুদকৃত ইলিশের উপর ভরসা রাখতে হচ্ছে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের।

এদিকে চাহিদার কথা মাথায় রেখে এরই মধ্যে ইলিশের দাম বৃদ্ধি করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীসহ আড়ৎদারা। বাগেরহাটের বাজারে ২শ থেকে ৩শ গ্রামের জাটকা ইলিশের কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩শ টাকায়। এছাড়া ৫শ থেকে ৬শ গ্রামের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দেড় হাজার টাকায়। তবে প্রধান মৎস্য কেন্দ্র কেবি বাজারে এক কেজি সাইজের বড় ইলিশের দেখা মেলা ভার। এছাড়া বাগেরহাট সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাজারে এখন সব ধরনের ইলিশের কদর বেশি। এ কারনে এসব বাজারগুলোতে জাটকা ইলিশের দেখা মিলছে বেশি। বছরের এ সময়টা ইলিশের দাম কিছুটা বেশি হলেও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে বাগেরহাটে পান্তা-ইলিশের ভক্তরা তাই জাটকা দিয়েই তাদের চাহিদা মেটাতে চায়।

এদিন সকালে বাগেরহাট মাছ বাজারের পাইকারী মাছ বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, নতুন করে
কোন মাছ না আসায় আমরা মজুদকৃত ইলিশ দিয়ে এবারের পহেলা বৈশাখে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাচ্ছি। কোল্ডস্টোরের মজুদকৃত মাছ, তাই দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। এছাড়াও বাজারে সামান্য কিছু তাজা মাছ পাওয়া যাচ্ছে যেগুলোর দাম আকাশ ছোয়া।

বাগেরাট বাজারে মাছ কিনতে আসা এনজিও কর্মী তারিক আহমেদ বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে
বছরের এ সময়টা ইলিশের দাম বেড়ে যায়। তাই আগে ভাগেই এসেছি মাছ কিনতে। দাম চড়া হলেও
এক কেজি সাইজের বড় ইলিশর দেখা মিলছেনা।

উপকুলীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী বলেন, বছরে এ সময়টায় জেলেরা তাদের জাল ও ট্রলার মেরামতের কাজে ব্যাস্ত থাকেন। এ কারনে নদী বা সাগরে মাছ থাকলেও সেই পরিমান জেলেরা নদী বা সাগরে মাছ ধরছে না। আর এ কারনেই বাগেরহাট কেবি বাজারে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে নতুন কোন মাছ আসছে না। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা যে মাছ গুলো কোল্ডস্টোরে মজুদ করেছিল সেগুলো এখন বাজারে ছাড়া হচ্ছে।

বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি বাজারের মৎস্য আড়ৎদার সমবায় সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব
এসএম আবেদ আলী বলেন, বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় জেলেদের জালে কম ইলিশ ধরা পড়ছে। এবার
সারা বছরই ইলিশের দাম ভালো থাকায় ব্যবসায়ীরা ইলিশের মজুদ কম করেছে। তাই মেকামে ইলিশের
সরবরাহ কম থাকায় একটু চড়া থাকাটাই স্বাভাবিক।

(এসএকে/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test