E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রাডো জীপ বের করে নিয়েছে প্রতারক চক্র

মোংলা বন্দরের দুই কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত, ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

২০১৮ জুন ০৬ ১৬:১২:১২
মোংলা বন্দরের দুই কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত, ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কার ইয়ার্ড থেকে ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের একটি বিলাসবহুল প্রাডো জীপ গাড়ী বের করে নিয়েছে প্রতারক চক্র।

এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার দায়ে বন্দরের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। এদিলে ঘটনার তদন্তে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রতারক চক্র জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে গাড়ী নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করা হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সাথে মোংলা বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা থেকে গাড়ী খোয়া যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষে ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, সোমবার বিকেলে বন্দর কর্তৃপক্ষের জেটির অভ্যন্তরের কার ইয়ার্ডের ৫ নম্বর সেডে থাকা একটি প্রাডো জীপ গাড়ী ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় এক ব্যক্তি। এরপর ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা কাগজপত্র মিলিয়ে দেখেন ভূয়া ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরিকৃত কাগজপত্র জেটির মুল গেইটে জমা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে মঙ্গলবার এ ঘটনায় ট্রাফিক অফিসার মিজানুর রহমান মোংলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।

সোমবার জেটির গেইটে ও ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্ব থাকা দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব অবহেলায়র দায়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃতরা হলো ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর মোহাম্মদ আলী ও সিনিয়র আউটডোর অ্যাসিস্টেন্ট মো. তোফাজ্জেল হোসেন।

মোংলা বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা থেকে গাড়ী খোয়া যাওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী ( তড়িৎ ও যান্ত্রিক) লে. কর্ণেল মিজানুর রহমান শাহ চৌধুরীকে।

এদিকে প্রাডো গাড়ী খোয়া যাওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর থেকে তদন্ত শুরু করেছে মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল আলম ও মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.ইকবাল বাহার চৌধুরী। পুলিশের তদন্ত এখনো চলছে বলে জানিয়েছেন মোংলা থানার ওসি।

মোংলা বন্দর কর্র্র্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান বলেন, এ ঘটনায় গঠন করা হয়েছে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি। ইতিমধ্যেই জড়িত প্রতারক চক্রটিকে চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করছে তদন্ত কমিটি। সংশ্লিষ্ট বিভাগেরর দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগ এবং পুলিশ প্রশাসন আলাদা-আলাদা ভাবে তদন্ত শুরু করেছেন।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার পর থেকে মোংলা বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের জেটির অভ্যন্তরের কার ইয়ার্ডের ৫ নম্বর সেডে থাকা একটি প্রাডো জীপ গাড়ী ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে অবৈধ উপায়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবার সাথে জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না।

মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, যে প্রাডো জীপ গাড়ীটি বন্দর থেকে কে বা কারা অবৈধ উপায়ে বের করে নিয়েছে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অবৈধ উপায়ে বের করে নেয়া ওই গাড়ীর কোন শুল্কায়নের কাগজপত্র কাস্টমসে জমা হয়নি।

মোংলা বন্দর শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এঘটনায় মোংলা বন্দর কেন্দ্রীক গাড়ী আমদানীকারকদের মধ্যে ভীতি প্রদর্শন ও এ বন্দরের সুনাম ক্ষুন্নের জন্যই একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীও জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগে একই কায়দায় মোংলা বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা থেকে প্রতারক চক্র একটি বিএমডব্লিউ গাড়ী ও একটি কন্টেইনার ভেঙ্গে কোটি টাকার কাপড় নিয়ে যায়। সর্বশেষ গত সপ্তাহে জেটির অভ্যন্তর থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে অনুমতিবিহীন ভাবে একটি কন্টেইনার বন্দর থেকে বাইরে নিয়ে আসেন তড়িৎ ও যান্ত্রিক বিভাগের অপারেটর মিজানুর রহমান। তবে শুধুমাত্র মুচলেকা দিয়ে ভুল স্বীকার করে ওই ঘটনা থেকে পার পেয়ে যায় অপারেটর মিজান।

(এসএকে/এসপি/জুন ০৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test