E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মদনে ইজ্জতের মূল্য ৫০ হাজার টাকা!

২০১৯ জানুয়ারি ২৮ ১৬:১৩:০৩
মদনে ইজ্জতের মূল্য ৫০ হাজার টাকা!

মদন (প্রতিনিধি) সংবাদদাতা : নেত্রকোনার মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের তালুককানাই গ্রামের রুবেল মিয়ার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী স্বপনা আক্তারের সাথে পাশের বাড়ির উনু মিয়ার ছেলে সাইকুল ইসলাম ধর্ষণ করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে গ্রাম্য সালিশে ।

শনিবার রাতে মেয়ের দাদা ইদ্রিম মিয়ার ঘরে এ সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। তালুককানাই গ্রামের শিহাব,সাগর,কাসেম,মিস্টার আলী, ,রমজান, সাদেক ডাক্তার, পাছআলমশ্রী গ্রামের আজিম ও ছেলের বাবা উনু মিয়ার উপস্থিতে আলোচনা সাপেক্ষে ছেলের বাবাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়।

জানা যায়, উনু মিয়ার বকাটে ছেলে সাইকুল দুই সন্তানের জননী স্বপনা আক্তারের বসত ঘরে গত ১৮ জানুয়ারী শুক্রবার রাতে প্রবেশ করে বলৎকার করে। এ ঘটনাটি বাড়ির লোকজনসহ আশে পাশের লোকজনের মধ্যে প্রকাশ পায়। এরই প্রেক্ষিতে ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন মিয়া গত সোমবার ২১ জানুয়ারী ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে মেয়ের বরণপোষন করাসহ বলৎকারকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে ঘটনাটি নিস্পত্তি হয়নি। পরবর্তিতে ২৬ জানুয়ারী শনিবার এলাকার মাতাব্বরগণ একত্রিত হয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে এ ঘটনাটি চাপাদেয়।

এ খবর শোনে সোমবার সরজমিনে সংবাদকর্মীরা এলাকায় গেলে ধর্ষিতা ও ধর্ষকের বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। ঘরে ধর্ষিতার শ্বাশুরি নূর নাহারকে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমি সিলেট থাকি খবর পেয়ে বাড়িতে এসেছি। কিভাবে মিমাংসা হয়েছে তাও আমি জানি না বলে জানান।

ধর্ষিতার দাদা ইদ্রিস মিয়ার ঘরে শনিবার রাতে সালিশ অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ইদ্রিস মিয়া সালিশের সত্যতা স্বীকার করে কোন সদুত্ত্বর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

ধর্ষক সাইকুল মিয়ার বাড়িতে গেলে পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নারী জানান, ঘটনাটি মিমাংসা হয়েছে এ নিয়ে আপনারা কেন বারাবারি করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যুবক জানান,সাইকুল এর আগেও একাধিক ঘটনা ঘটিয়ে সালিশে জরিমানা দিয়েছে। ন্যায় বিচার না হওয়ায় সে এ ধরণের ঘটনা করে যাচ্ছে।

মাতাব্বর সাগর, শিহাব,মিষ্টার আলী জানান,আলশ্রী গ্রামের আনোয়ার উক্ত ঘটনাটি নিস্পত্তি করার জন্য কয়েকজন মাতাব্বর নিয়ে শনিবার রাতে ইদ্রিস মিয়ার বাড়িতে বসলে আমরা ঘটনাস্থলে হাজির হই এবং আলোচনা সাপেক্ষে সার্বিক দিক বিবেচনা করে বলৎকার সাইকুল মিয়ার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে ধর্ষিতার ফুফাতো ভাই আজিমের হাতে টাকা বুঝিয়ে দেই।

নায়েকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একই গ্রামের রিপন মিয়া জানান,এ ঘটনা শোনার পর কয়েকজন মাতাব্বর নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিষয়টি বলৎকার ঘটনা হওয়ায় নিস্পত্তি করতে পারিনি।

ওসি মোঃ রমিজুল হক জানান, এ ঘটনাটি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএমএ/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test