E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 

বাগেরহাটে বাঁধের মাটি কেটে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ!

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯ ১৮:৪৭:২৮
বাগেরহাটে বাঁধের মাটি কেটে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ!

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাঁধের মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে সামাজিক বনায়নের বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ ধ্বংস করার অভিযোগ উঠেছে চীনের একটি ঠিাকদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, বালু ও মাটি সরবরাহ বানিজ্যের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে চীনের ঠিাকদারী প্রতিষ্ঠানকে একাজে সহয়তা করছে স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপকূলের শরণখোলা উপজেলার মানুষদের ঝড়, জলোচ্ছাসসহ নানা প্রাকৃতি দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষায় সরকার বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় ৬শ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩ বছর পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩ কিলোমিটার ঝুকিপূর্ন বেড়ী বাঁধ নির্মান কাজ শুরু করেন চীনের এইচ, সি, ডাব্লিউই নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি বাঁধ নির্মানের জন্য মাটি সংগ্রহের কাজ করাতে গিয়ে স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের সহায়তায় বাঁধের পাশ থেকে বলেশ্বর নদী থেকে মাটি লুটের মহোৎসব শুরু করে।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মধ্য ও পূর্ব খোন্তাকাটার মধ্যবর্তী এলাকা থেকে বাঁধে দুই পাশের উপকুলীয় সামাজিক বনায়নের রোপনকৃত নানা প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলে। ওই সময় স্থানীয় বাসিন্দা আ. রহিম গাজী, আনসার হাওলাদার, নজরুল ইসলাম হাওলাদার, বাদল হাওলাদার, আলম তালুকদার, মোতালেব তালুকাদর, সুলতান তালুকদার, জলির তালুকদার, সোবাহান তালুকদার, বাচ্চু হাওলাদারসহ অর্ধশত গ্রামবাসী বনায়নের গাছসহ মাটি না কাটতে বাঁধা দেয়। কিন্তু গ্রামবাসীর বাধা উপেক্ষা করে৩৫/১ পোল্ডারের ভেরী বাঁধটির ওই এলাকা ঘেষে প্রায় ১৫/২০ একর জমির বনায়নের শত শত গাছ মুহুতেই কেটে ফেলা হয়।

এ ব্যাপারে, স্থানীয় যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন মধু বলেন, বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কিছু লোভী রাজনৈতিক নেতা সরকারী জমিসহ অন্যের মালিকানা জমির মাটি জোর করে কেটে লুট করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এবং বাঁধের কোল থেকে মাটি কেটে তার সাথে বালু মিশিয়ে চীনের ঠিাকদারী প্রতিষ্ঠানটি দায়সারা ভাবে বেড়ী বাঁধের কাজ করায় সরকারের এই বড় প্রকল্পের স্থায়িত্বসহ কোটি কোটি টাকা পানিতে ভেঁসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বাঁধের নির্মান কাজ দেখাশুনার দায়িত্বরত কর্মকর্তা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বাঁধের মাটি সরবারহের জন্য আলাদা ঠিকাদারকে দায়িত্ব রয়েছে। গাছ কাটা ও মাটি সংগ্রহের ব্যাপারে এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ থাকলে তা গ্রহন করা হবে। এছাড়া পরিবেশের ক্ষতি করে বাঁধ নির্মান করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যেশ নয়।

সামাজিক বনায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. মিজানুর রহমান বলেন, একাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি ওই এলাকায় গিয়ে মাটিসহ বেড়ী বাঁেধের দুই পাশের গাছ কাটার বিষয়টির সত্যতা দেখতে পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগীতায় বনের অন্য গাছ টাকা বন্ধের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, সামাজিক বনায়ন ধ্বংস করে মাটি খননের খবর তিনি এলাবাসীর মাধ্যমে জেনেছেন। চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নতুন করে যাতে সামাজিক বনায়নের গাছসহ বেড়ী বাঁধ কেটে মাটি সংগ্রহ করতে না পারে তা দেখভাল করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(এসএকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test