E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সূতি নদী খননের পর তৈরী হচ্ছে খাল 

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২৫ ২৩:২৫:০৯
সূতি নদী খননের পর তৈরী হচ্ছে খাল 

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ও মোজাফরপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া একসময়ের খরস্রোতা সূতি নদী নাব্যতা হারিয়ে ফসলের মাঠ হয়েছিল। এলাকাবাসী এই নদীটি খনন করে নব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবী তুলছিল গত কয়েক বছর ধরে। এরই প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে এই নদীটি ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে খনন কাজ চলছে। তবে সূতি নদীটি খননের পর তৈরি হচ্ছে খাল। এ অভিযোগ এলাকার শত শত কৃষকের।

নদীটি কত কিলোমিটার খনন করা হবে কিংবা এই নদীটি খননের জন্য কি পরিমান টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, কতফুট গভীর বা প্রসস্থ করা হবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম কী, কাজের সময়সীমা কতদিন এসব বিষয় বিস্তারিত জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগেই একটি সাইনবোর্ডের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরার নিয়ম থাকলেও সূতি নদী খনন প্রকল্পের কাজে এ নিয়ম একেবারেই মানা হচ্ছেনা।

সরেজমিনে সোমবার বিকেলে নদী তীরে খনন কাজ দেখতে গিয়ে প্রকল্পের পাশে কোন সাইনবোর্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাইনবোর্ড না থাকায় নদী খননের সময়সীমা কত দিন, কত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, কতফুট গভীর ও প্রসস্থ করা হবে তার কোন তথ্যই পাওয়া যায়নি। স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, নদী খোদে (খনন করে) এখন খাল বানানো হচ্ছে।

সুন্দ্রাকান্দা গ্রামের মো: নূরু খানের ছেলে আব্দুর রউফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঠিকাদার যখন নদী খোদতে (খনন করতে) আসে তখন আমরা গ্রামবাসী নদীটি ভালোভাবে খোদার জন্য দাবী জানাই, নদীটি বড় করে খনন করার জন্য সমস্ত গ্রামবাসী কথা বললেও কোন কাজ হয়নি বলে তার দাবী। তার মতে নদী খননের ফলে নদী আরো ছোট হচ্ছে। এতে নদীর আরো বেশি ক্ষতি হচ্ছে। নদীটি সঠিক ভাবে বড় করে খনন করার দাবী আব্দুর রউফের মতো শত শত কৃষকের। কিন্তু কে শুনে কৃষকের কথা।

মোজাফরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাব্যতা হারিয়ে যাওয়া সূতি নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নদী খননের কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম কি, খননের বরাদ্দ কত, কতখানি দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং গভীর তা বিস্তারিত একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে জনসমক্ষে তুলে ধরার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সূতি খনন প্রকল্পের বেলায় এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। নদী খননের পর এখন তৈরি হচ্ছে খাল। জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, খনন করে মাটি নদীর ভেতরেই দু’পাশে ফেলা হচ্ছে। এতে এই মাটি আস্তে আস্তে ভেঙ্গে নদীতেই পড়ছে।

তিনি আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিশোরগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে এ বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানিয়েছিলাম, তিনিও বলেছিলেন, বিস্তারিত তথ্য দিয়ে গত রোববারের মধ্যেই প্রকল্প এলাকায় সাইনবোর্ড লাগাবেন। পাশাপাশি প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদেরও পাঠাবেন, কিন্তু এই সময়ের মধ্যে সাইনবোর্ডও লাগানো হয়নি, কোন কর্মকর্তাও আসেনি।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলামের সঙ্গে সোমবর বিকেলে প্রকল্প এলাকা থেকেই মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি একথা সত্য, তবে কাল পরশুর মধ্যেই বিস্তারিত তথ্য সহ একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো হবে। তাছাড়া কাজের প্রাক্কলন কিভাবে করা হয়েছে তাও জানানোর জন্য একজন এসও পাঠানো হবে।

তিনি আরো বলেন, যদি প্রাক্কলন মোতাবেক কাজ না হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে আবার নতুন করে খননের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাব পাঠানো হবে।

(এসবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test