E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে ৬১ পুলিশের করোনা জয়

২০২০ জুন ২২ ১৮:১৯:২৯
বরিশালে ৬১ পুলিশের করোনা জয়

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি, বরিশাল : করোনা পরিস্থিতিতে ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ পুলিশ। যারা শুরু থেকেই করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশ শতভাগ বাস্তবায়ন ও জনগনকে সচেতন করার ভূমিকা রেখে চলছেন।

পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের দাফন, সৎকার, করোনা শনাক্তর বাড়ি লকডাউন থেকে শুরু করে সবই করে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। আর এটা করতে গিয়ে সারাদেশেই মরণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঠিক একই চিত্র বরিশালেও। প্রায় প্রতিদিনই করোনা সম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্যে উঠে আসছে বরিশাল মেট্রোপলিটন, জেলা এবং রেঞ্জ পুলিশে কর্মরত সদস্যদের নাম। তবে এরমধ্যে আশঙ্কাজনক হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে মেট্রোপলিটন পুলিশে। গত ৯ মে থেকে রবিবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যর সংখ্যা ১৭৪ জন।

অপরদিকে বরিশালে পুলিশ আক্রান্ত সদস্যর মধ্যে সুস্থ্যতার হারও বাড়ছে। মোট আক্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে ৬১ জন পুলিশ সদস্য করোনা জয় করেছেন। তবে সুস্থ্য হয়ে ওঠা পুলিশ সদস্যদের কাজে যোগদানের বিষয়ে এখনও কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে গত ৯ মে সর্বপ্রথম করোনা শনাক্ত হয় উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর জোন) এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের গাড়ি চালক মাহমুদ হোসেন। তারপরে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্যতা লাভ করলেও চালক পুলিশ সদস্য মাহমুদ হোসেন এখনও এই ভাইরাস থেকে রেহাই পাননি। প্রতিবারই ফলোআপ রিপোর্টে তার করোনা পজেটিভ আসছে। যদিও তার মধ্যে করোনার কোন উপসর্গ নেই। পাশাপাশি তিনি পুরোপুরিভাবেই সুস্থ্য রয়েছেন।

মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর বিশেষ শাখা সূত্রে জানা গেছে, সবশেষ মেট্রোপলিটন পুলিশের ১৭৪ জন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আক্রান্ত ব্যক্তি হলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম। কোন প্রকার উপসর্গ ছাড়াই নমুনা পরীক্ষায় তার করোনায় শনাক্ত হয়। এছাড়াও সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী) মোঃ রাসেল আহমেদসহ ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর, নায়েকসহ কনস্টেবল রয়েছেন।

সূত্রে আরও জানা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ্যতা লাভ করা ৬১ জনের মধ্যে দুই জন ইন্সপেক্টর রয়েছেন। তারা হলেন, কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল ও অপরজন এমাদুল করিম। এছাড়া চারজন উপ-পরিদর্শক, পাঁচজন সহকারী উপ-পরিদর্শক ও ৫০ জনের মধ্যে রয়েছেন নায়েক ও কনস্টেবল। সুস্থ্যতা লাভ করাদের মধ্যে নারী পুলিশ সদস্য রয়েছেন মাত্র একজন। যারা সুস্থ্য হয়েছেন তাদের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ্য হয়ে ফিরেছেন আটজন। সবশেষ গত ১৬ জুন পাঁচজন পুলিশ সদস্য করোনা থেকে সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন। তবে সুস্থ্য হওয়া সবাই এখনো হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন দিক নির্দেশনা দেননি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এছাড়া এখনো যারা আক্রান্ত হিসেবে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তাদের মধ্যে ১২ জন ঢাকার রাজারবাগ, ১৬ জন বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল, জেনারেল (সদর) হাসপাতালে ১২ জন ও শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন আরও চারজন। বাকিরা যে যার বাসায় বসেই চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, করোনার শুরু থেকে অদ্যাবধি পুলিশ সদস্যরা নিজেদের জীবন বাঁজি রেখে যানমালের নিরাপত্তা দেয়া, কর্মহীনদের মাঝে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়াসহ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ শতভাগ পালন করতে মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তার পরেও পুলিশ সদস্যরা পিছু পা হয়নি এবং হবেও না। যতোদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে না আসে ততোদিন জনগনের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে পুলিশ সদস্যরা মাঠে থাকবেন।

(টিবি/এসপি/জুন ২২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test