E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নালিতাবাড়ী সীমান্তে বন্যহাতি গুড়িয়ে ১৯ বসত ঘর

২০১৪ আগস্ট ১৫ ১৪:০৪:৫৯
নালিতাবাড়ী সীমান্তে বন্যহাতি গুড়িয়ে ১৯ বসত ঘর

শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তের দাওধারা-কাটাবাড়ি এলাকার গারো পল্লীতে একদল বন্যহাতির বৃহস্পতিবার রাতভর তান্ডব চালিয়ে একটি ১১ পরিবারের ১৯ বসতঘর গুড়িয়ে দিয়েছে। 

বন্যহাতির দল খেয়ে সাবাড় করেছে গোলার ধান-চাল। ধ্বংস করেছে আসবাপত্র সহ ঘরের সকল জিনিসপত্র। বাড়ীর আশপাশে চাষ করা কাসাভা (শিমুল আলু) ও আদা ক্ষেতের কাসাভা-আদা খেয়ে, পায়ে মাড়িয়ে সাবাড় করেছে। বন্যহাতির তান্ডবে ঘরবাড়ী-সহায় সম্পদ হারিয়ে ওইসব পরিবারের সদ্যস্যরা এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। তাদের চোখে মুখে এখন কেবলই আতঙ্ক আর উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, ১৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা-কাটাবাড়ি এলাকায় ইসলামিক মিশনের পাশ্ববর্তী গারোপল্লীতে ৫০/৬০ টির একদল বন্যহাতি পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসে। খাবারের সন্ধানে এসব বন্যহাতির দল গারোপল্লীর অধিবাসীদের মাটির দালানে মাথার ঢুস দিয়ে ভেঙ্গে ঘরের জিনিসপত্র ও আসবাপত্র তছনছ করে এদিকে-সেদিক ছুড়ে ফেলতে থাকে। একপর্যায়ে হাতির দল গোলার ধান-চাল খেতে থাকে। বন্যহাতির আক্রমনের মুখে লোকজন দিগি¦দিক ছুটাছুটি শুরু করে। গোলার ধান-চাল খাওয়া শেষ হলে হাতির দল বাড়ীর আশপাশের কাসাভা ও আদা খেতে হামলে পড়ে। এভাবে রাতভর চলতে থাকে বন্যহাতির তান্ডব। ভোরে আলো ফোটার পর হাতির দল ফের পাহাড়ে চলে যায়।

দাওধারা-কাটাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বন্যহাতির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত রাশইয়া চিশিম (৪৮) বলেন, হাতি আমার ২ টা মাটির দালানের বসত ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। গোলার ১৬ মন ধানও খেয়ে সাবাড় করেছে। রাইত নয়টার দিকে পাহাড় থেকে বন্য হাতি নেমে এসে রাতভর এলাকায় তান্ডব চালিয়েছে। তিনি জানান, গুনে দেখেছি দলে প্রায় ৫০ টির মতো হাতি ছিল। প্রাণভয়ে আমি বাঁশ ঝাড়ের লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেছি।

আরেক ক্ষতিগ্রস্ত কার্ত্তিণা ম্রং (৫২) বলেন, হাতি আমার সব কাইরা নিছে। ২ টা ঘর ভেঙ্গেছে। গোলার ধান, ৫২ শতক জমির ক্ষেতের আদা, শিমুল আলু সব খেয়ে সাবাড় করেছে। হাতি আমাদের সবকিছু কেড়ে নিয়ে নিংস্ব করে দিয়েছে। কি খাবো, কোথায় থাকবো, কিভাবে থাকবো কিছুই বুঝে ওঠতে পারছি না।

স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, কয়েক বছর যাবত বন্য হাতি পাহাড় থেকে নেমে এসে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে তান্ডব চালিয়ে আসছে। কিন্তু এবারের তান্ডব দেখে মনে হচ্ছে, দিন দিন বন্যহাতির আক্রমণ ও তান্ডবের হিংস্রতা বাড়ছে।

নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুখলেছুর রহমান রিপন দুপুরে বন্যহাতির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারের নিকট আবেদন জানানো হবে।

(এইচবি/এটিআর/আগস্ট ১৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test