E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাগরপুরে শিক্ষক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্তে ডিবি

২০২০ ডিসেম্বর ১৭ ১৬:০৪:৩৩
নাগরপুরে শিক্ষক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্তে ডিবি

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : দীর্ঘ দিন ধরে ২ সন্তানের জননীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পচাসারুটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরহাদ আলীর (৪৫) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী উপজেলার শাখাইল গ্রামের দুঃখু মিয়ার ছেলে। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগি মোছা. মর্জিনা বেগম (৩৭) বাদি হয়ে মো. ফরহাদ আলী সহ ৩ জন কে আসামী করে টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাগরপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল ডি.বি দক্ষিন কে দায়িত্ব দেন। এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারীর সাথে শিক্ষক ফরহাদ আলীর যৌন উত্তেজক আপত্তিকর কথপোকথনের একাধিক অডিও ক্লিপস ভাইরাল হলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

মামলা সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের ভারড়া গ্রামের হত দরিদ্র কাঠ মিস্ত্রী আ.মোতালেবের স্ত্রী মোছা. মর্জিনা বেগম কে চাকুরী দেওয়ার সূত্র ধরে মর্জিনার সাথে ঘনিষ্ঠ হন পচাসারুটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.ফরহাদ আলী। চাকুরী প্রত্যাশী মর্জিনার দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে মোবাইল ফোনে ও সরাসরি প্রতিনিয়ত শারিরিক মিলনের জন্য কু-প্রস্তাব দিতে শুরু করে। ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি এলাকার মাতাব্বরদের জানালে, এ নিয়ে একটি গ্রাম্য সালিশ বসে।

প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রাম্য সালিশে বসতে রাজি হননি। গ্রাম্য মাতব্বরদেরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার হীণ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য বিভিন্ন ভাবে মর্জিনাকে কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। গত ০১ নভেম্বর ভোরে প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মর্জিনার বাড়িতে গিয়ে মর্জিনার মুখ চেপে ধরে বিবস্ত্র করে ফেলে কাপড়ের আচল দ্বারা ভুক্তভোগী নারীর গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে লাঠি দিয়ে মর্জিনার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।

সেসময় তার ডাক চিৎকারে মর্জিনার স্বামী সহ আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ঘর বাড়ী জ্বালিয়ে দেওয়া সহ নানা ধরনের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে মর্জিনার আত্মীয় স্বজনরা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে নাগরপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে মর্জিনা গত ০৯ নভেম্বর টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাগরপুর আমলী আদালতে ৩ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন কে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং ২১৫/২০২০)। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত সুষ্ঠ্য তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল ডি.বি দক্ষিন কে দায়িত্ব দেন।

মামলার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক ফরহাদ গ্রামের প্রভাবশালীদের দিয়ে মর্জিনাকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করায় ভুক্তভোগীর পরিবার শংকায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক এম এ রৌফ বলেন, সভাপতির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলার বিষয়টি আমরা জেনেছি তবে সংগঠন তার ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় নেবে না।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল ডিবির (দক্ষিন) উপ পরিদর্শক (এস আই) মো.ওবায়দুর রহমানের সেল ফোনে (০১৭১২৩৯১০৮১) যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধিন রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পচাসারুটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং কমিটির সভাপতি ডা.তাহেরুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত বিষয়। যদি স্কুলের ভিতর এ ধরনের কোন রকম ঘটনা ঘটতো তাহলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম। আর ভিকটিমও আমাদের কাছে কোন অভিযোগ করেনি। তবে আমি শুনেছি ভুক্তভোগী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে।

(আরএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test