E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলে বিচারককে হত্যার হুমকি দিয়ে জঙ্গি সংগঠনের চিঠি

২০২১ আগস্ট ২৭ ২৩:২০:৪৭
টাঙ্গাইলে বিচারককে হত্যার হুমকি দিয়ে জঙ্গি সংগঠনের চিঠি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিনকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠন। এছাড়া তাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হলে তার ঘনিষ্ট স্বজন আউট সোর্সিং হিসেবে প্রসেস সার্ভার পদে চাকুরীরত এক ছেলেকে জবাই করে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুরো বিচারকদের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বিচারক খালেদা ইয়াসমিনসহ তার পরিবারের লোকজন। বিষয়টি শুক্রবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে বিচারক খালেদা ইয়াসমিন নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার একটি খাকি খামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিনের কাছে একটি চিঠি আসে। সেখানে প্রেরকের স্থানে জুবায়ের রহমান লেখা রয়েছে। চিঠিতে লেখা হুবুহু তুলে ধরা হলো, ম্যাডাম- আপনাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি দিলাম। বিস্তারিত পড়ে দেখুন।

আমরা জঙ্গি সংগঠনের লোক। তাই জীবনে চলার পথে অনেক অন্যায় কাজ করেছি। এমনকি এখনও করি।
আমরা যখন যাকে ট্রার্গেট করি তখন তাকে ছলে বলে কৌশলে হত্যা কারি। এটাই আমাদের পেশা। এবার আপনাকে হত্যা করার পালা। কারন আপনি নারী ও শিশু কোর্টে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত অনেকটি বড় ধরনের মামলার রায় দিয়েছেন। তাতে আমাদের লোক জনের খুব বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। তাই আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলছি যদি নিজের জীবনের প্রতি মায়া থাকে তাহলে টাঙ্গাইল থেকে বদলি হয়ে চলে যান। যদি কথা না শুনেন তাহলে আমরা আপনাকে হত্যা করতে বাধ্য হবো। আর আমাদেরকে যারা সহযোগীতা করতেছে তারা কয়েকজন আইনজীবি এমনকি জজ কোর্ট ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এর স্টাফদের সমন্বয়ে।

আপনাকে যেভাবে হত্যা করা হবে তার ২টি নমুনা

টার্গেট-১। অফিস হতে বাসা এর মধ্যে আসা যাওয়ার পথে আপনার গাড়ীতে বোমা নিক্ষেপ করা হবে।

টার্গেট-২। অফিস চলাকালীন সময়ে লোক জনের ভিরের মধ্যে গিয়ে আপনার এজলাশ বা খাসকামড়া এর মধ্যে বোমা নিক্ষেপ করা হবে।

তবে একটা কথা মনে রাখবেন আপনাকে পুলিশ যতই নিরাপত্তার মধ্যে রাখুক না কেন আপনাকে আমাদের বোমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। তাই প্রাণ বাঁচাতে চাইলে টাংগাইল হতে তাড়াতাড়ি বদলি হয়ে চলে যান।

যদি আপনাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হই। তাহলে আমাদের হিংস্রতার টার্গেট রয়েছে আরেকটি। সেটা হলো-আপনার নারী ও শিশু কোর্টে আউট সোর্সিং’ হিসেবে প্রসেস সার্ভার পদে যে ছেলেটি চাকরি করে সে নাকি আপনার খুব ঘনিষ্ট আত্বীয়। তাই আমাদের লক্ষ্য ছেলেটাকে অফিসে আসা যাওয়ার পথে বা কোর্ট থেকে বাহিরে যাওয়া মাত্রই আমরা ছেলেটাকে অপহরন করবো। পরে গহীন জায়গায় নিয়ে আটকিয়ে রেখে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করবো।
আর যদি টাকা না দিতে পারেন তাহলে ছেলেটাকে জবাই করে হত্যা করা হবে।
পরে লাশ যমুনা নদীতে ফেলে দেয়া হবে। কথাটা মনে রাখবেন।

ইতি
জঙ্গি সংগঠন।

এদিকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন জানান, চিঠিটি পাওয়ার পর আইনশৃংখলা বাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এছাড়া তিনি ও তার পরিবারের লোকজন বর্তমানে আতংকের মধ্যে রয়েছেন।

পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, বিষয়নি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সাথে বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ও তার পরিবারের লোকজনদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল র‌্যাব-১২ এর কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, র‌্যাবের সকল টিম বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।

(আরকেপি/এসপি/আগস্ট ২৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test