E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শ্যামনগরে পরীক্ষার্থীদের করোনার টিকা প্রদানে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ

২০২১ নভেম্বর ২৪ ১৯:৪২:৩৫
শ্যামনগরে পরীক্ষার্থীদের করোনার টিকা প্রদানে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরে এইচএসসি ও আলীম পরীক্ষার্থীদের মাঝে করোনার টিকা প্রদানে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুর ১২টায় বেসরকারি এনজিও সংস্থা গণমুখী ফাউন্ডেশনের হলরুমে শিক্ষার্থীদের মাঝে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। আর এই টিকা গ্রহণের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের টিকা ফি বাবদ দিতে হচ্ছে মোট ১৬০ টাকা। এর মধ্যে ফটোকপি বাবদ নেয়া হচ্ছে ১০ টাকা।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আর্থিক বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আর শিক্ষকরা বলছেন, নাশতা, খাওয়া ও যাতায়াত খরচ বাবদ কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, গণমুখী ফাউন্ডেশনের হলরুমে মোট ১৫০০ শিক্ষার্থীর মাঝে টিকা প্রদান কার্যত্রম শুরু হয়েছে। আর এই টিকা প্রদানের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৬০ টাকা হিসেবে উত্তোলন করা হয়েছে মোট ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালি ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম জসিম জানান, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে করোনা টিকার ফি বাবদ ১৫০ টাকা ও ফটোকপি করার জন্য আরো ১০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। তাদের মাদ্রাসা থেকে ৫০ জন আলিম পরীক্ষার্থী আজ টিকা নিতে এসেছে। টিকা বাবদ প্রত্যেকেই ১৬০ টাকা করে দিয়েছে। সব টাকা মাদ্রাসার হুজুর আতিকুল্লাহর কাছে দিতে হচ্ছে।

করোনা টিকা বাবদ টাকা উত্তোলনের বিষয়ে পাতাখালি ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আতিকুল্লাহ্ জানান, এক হাজার টাকা নওয়াবেকী মাদরাসার অধ্যক্ষ (প্রিন্সিপাল) মাওলানা ওহিদুজ্জামান খরচ বাবদ নিয়েছেন। বাকি সব টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়া হবে। অতিরিক্ত কোনো টাকা তারা নেবেন না বলে আরো জানান।

করোনা টিকা প্রদানের সমন্বয়কারী মাওলানা ওহিদুজ্জামান জানান, এখানে ৮টি মাদরাসা ও কয়েকটি কলেজের মোট ১৫০০ শিক্ষার্থীর করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। টাকা উত্তোলন বিষয়ে তিনি জানান, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন করে মনিটর করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তার কাছে টাকা জমা দিচ্ছে। শিক্ষকরা শুধু সুপারভিশন করছেন। টিকা কেন্দ্রে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের যাতায়াত, নাশতা-দুপুরের খাওয়াসহ কিছু খরচ রয়েছে। সেগুলো শিক্ষার্থীদের টাকায় একটি ফান্ড করা হয়েছে। খরচের টাকা সেই ফান্ড থেকে খরচ করা হচ্ছে, বাকি টাকা তাদের ফেরত দেওয়া হবে। আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি।

শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অজয় কুমার সাহা জানান, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। আর্থিক কোনো কিছুর সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তারা শুধু ফাইজারের প্রথম ডোজ করোনা টিকা সরবরাহ করছেন। আর তা স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে প্রদান করছেন। টাকা নেওয়ার বিষয়ে ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বলতে পারবেন বলে তিনি আরো জানান।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত জানান, আর্থিক সুবিধা নিয়ে টিকা দেয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে, এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। তিনি আরো জানান, শ্যামনগর উপজেলার দুটি স্থানে এইচ.এস.সি সমমানের ২২০০ শিক্ষার্থীর করোনার টিকা প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে গণমুখী ফাউন্ডেশন ও ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল।

(আরকে/এএস/নভেম্বর ২৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test