E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অটোরিকশা চালকের মেয়ের জিপিএ-৫ অর্জন, সাফল্য ধরে রাখতে প্রয়োজন সহযোগিতা

২০২২ ফেব্রুয়ারি ১৬ ২৩:১৬:১৪
অটোরিকশা চালকের মেয়ের জিপিএ-৫ অর্জন, সাফল্য ধরে রাখতে প্রয়োজন সহযোগিতা

রিপন মারমা, রাঙামাটি : রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলা ব্যাঙছড়ি মুসলিম পাড়া অটোরিকশা চালক শাহজাহান কন্যা মেধাবী আয়েশা ছিদ্দিকা (পিংকি) দারিদ্রতাকে জয় করে  কাপ্তাই নৌ বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ হতে (এইচ এসসি) বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন। অভাবনীয় সাফল্য এনে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। শতভাগ মনের চেষ্টা করে এই বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি।

মেধাবী আয়েশা ছিদ্দিকা দারিদ্র্যতাকে জয় করে ভালো ফলাফল করেও চট্রগ্রাম কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তায়।তিনি একজন ডাক্তার হতে চান তার স্বপ্ন পূরণে শুধু প্রয়োজন সাহায্য-সহযোগিতা। উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেলে সেই অসহায় মানুষের সেবা করবে বলে জানিয়েছেন।

কাপ্তাই নৌ বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ কমান্ডার নুরের আলম জানান, শুধুমাত্র আয়েশা সিদ্দিকা নয় এ ধরনের আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে এইচ এসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে যাদের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা বেশ অস্বচ্ছল।

মেধাবী আয়েশা ছিদ্দিকা কাছ থেকে তার ফলাফল প্রতিক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসএসসিতে জিপিএ =৪.৮৯ (এ) পাবার পর আমার মনে জেদ চাপে যে করে হউক এইচএসসিতে জিপিএ -৫ পেতে হবে। অনেক সময় বই কিনতে পারি নাই। কিন্তু ক্লাসে কলেজ এর শিক্ষকরা যেইভাবে পাঠদান করিয়েছেন তাতে আমি অনেক কিছু শিখেছি। বাসায় এসে টুকটাক মাকে সংসারের কাজে সহযোগিতা করে মধ্যরাত পর্যন্ত পড়েছি। ক্লাসের বাহিরে কলেজ এর শিক্ষক কামরুল স্যার, আমিনুল স্যার, তানভির স্যার আমাকে বাড়তি অনেক কিছু পরিয়েছেন। কিন্ত স্যাররা এর বিনিময়ে আমার থেকে কোন পারিশ্রমিক টাকা পয়সা নেয়নাই। আমি এই ফলাফল এর জন্য কলেজ এর অধ্যক্ষ স্যার, উপাধ্যক্ষ স্যার সহ সকল শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।তিনি আরোও বলেন,ভবিষ্যতে আমি একজন ডাক্তার হয়ে দেশ ও মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবো।

বুধবার সকাল ব্যাঙছড়িতে আয়েশা ছিদ্দিকা বাবার মোঃ শাহাজাহান এর সাথে কথা হয় সেসময় তিনি জানান, আমি অটোরিকশা চালক গত বছরে করোনা কারনে ভালো আয় করতে পারিনি। আমি আমার মেয়েকে প্রয়োজন মতন বই কিনে দিতে পারিনি, আমার চিন্তা ভাবনা ছিল মেয়েকে এইচ এসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করাবো যেহেতু আমাদের পরিবার এত সমস্যা থাকার পরেও আমার মেয়ে নিজেকে নিজে এত কিছু করে ভাল রেজাল্ট করেছে।তিনি আরোও জানান, আমার মেয়ে এত ভাল রেজাল্ট করেছে আমি তাকে দোওয়া ছাড়া আমি আর কিছু দিতে পারছিনা।

আমার আরো এক ছেলে মোঃ ইয়াসিন আরাফাত কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে। স্ত্রী সহ ৪ জনের সংসার আর সন্তানদের লেখাপড়া, সব মিলে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। তাদের ভালো খাবার, ভালো পোশাক সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছু দিতে পারি নাই। এরপরেও আমার বড় মেয়ে সব কষ্টকে উপেক্ষা করে হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে এই ফলাফল অর্জন করেছেন। আমি চাই সেই বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে আমার স্বপ্নকে পূরণ করবে। মেয়ের ভবিষ্যৎ লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সমাজের বিত্তবান মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন পরিবারটি।

(আরএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test