E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জামালপুর জেলা কারাগার পুননির্মাণ প্রকল্পে নালিশী জমি দখলের অভিযোগ 

২০২২ মার্চ ২৯ ১৭:১৭:১৭
জামালপুর জেলা কারাগার পুননির্মাণ প্রকল্পে নালিশী জমি দখলের অভিযোগ 

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে জামালপুর জেলা কারাগার পুননির্মাণ প্রকল্পে নালিশী জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। আদালত ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণে অস্থায়ী ও অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও জেল কর্তৃপক্ষ তা না মেনে প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। অপরদিকে কারাগার কর্তৃপক্ষ বলছেন, নালিশী জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছেনা। 

আজ মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকাল ১১ টায় জামালপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জমির একাংশের মালিক রাবেয়া আজাদের ছেলে সাকিবুল আজাদ বলেন, জেলা কারাগারে পূবে ২৫ শতাংশ জমির মালিক আমার নানা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. বাতেন। এই জমি মৃত্যুর আগে তিনি তার দুই মেয়ে রাবেয়া আজাদ ও ফাতেমা আক্তারকে লিখে দেন। নানা জমি খারিজ করতে গিয়ে দেখেন, ওই জমি তার পিতা মৃত আলিফ উদ্দিন মুন্সির নামে না হয়ে ভুলবশত ১নং খাস খতিয়ানে লিপিবদ্ধ হয়েছে। তখন তিনি বাদী হয়ে জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক, জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) বিবাদী করে ৩২/১৯৯৮ অন্য মোকদ্দমা দায়ের করেন। আদালত দোতরফা সূত্রে ২০০০ সালের ২ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা আ. বাতেনের পক্ষে রায় দেন। এরপর রায়ের বিপক্ষে সরকার পক্ষ বাদী হয়ে ওই তিন কর্মকর্তা আ. বাতেনের বিরুদ্ধে ১৪/২০০১ মোকদ্দমার দায়ের করেন। ২০০২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আগের রায় বহাল ও সত্য বলে ঘোষণা দেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, রায় বহাল ও সত্য ঘোষণার পর সরকার পক্ষ হাইকোর্টের সিভিল রিভিশনে Rule No-798(CON) OF 2016 দায়ের করেন, যা এখনও চলমান। এরপর বাংলাদেশ সরকার ফখরুদ্দীনের শাসনামলে ওই নালিশী জমিতে জেলা কারাগারের বাউন্ডারি নির্মাণের লক্ষে আ. বাতেনকে উচ্ছেদের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। তখন তিনি আবারও কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সার্ভেয়ার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও জেলা প্রশাসককে বিবাদী করে ১১৯/২০০৭ মামলা দায়ের করেন। বিবাদী ওই পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়র জজ আদালত ২০১০ সালের ২৭ মার্চ বাদীকে বেদখলকার হতে চিরতরে বিরত থাকার আদেশ ও রায় দেন। তারা আবার ৪৮/২০১০ অন্য আপিল মোকদ্দমা দায়ের করেন, যা এখনো চলমান।

তিনি আরও বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের স্থাপত্য অধিদপ্তর থেকে জেলা কারাগার পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারিতে একটি চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন করা হয়। এই নকশায় ৮১৭ নং দাগের ৪.১৫ শতাংশের মধ্যে ৩.৯২ শতাংশের কাতে ২৫ শতাংশ জমি অন্তর্ভুক্ত হলে বেদখল ও স্থাপত্য নির্মাণ না করার জন্য জামালপুরের সিনিয়র জজ আদালতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধার দুই মেয়ে মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি বিবাদীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন আদালত। তারা কারণ না দর্শিয়ে উল্টো জোরপূর্বক টিনের বাউন্ডারি ভেঙে নালিশী জমিতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন।

তিনি সরকারের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে ওই জমি নিয়ে বিবদমান পরিস্থিতির সুরাহা দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা আ. বাতেনের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন জানান, জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ জমি বুঝিয়ে দেওয়ার পরই সেখানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. আবু ফাত্তাহ জানান, নালিশী জমিতে আমরা কোনো কাজ শুরু করিনি। তবে ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে কারাগার পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

(আরআর/এসপি/মার্চ ২৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test