E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সমঝোতার কথা বলে লাশ দাফনের ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও পাওনা টাকা ফেরত পায়নি ফারুক

২০২২ অক্টোবর ১৭ ১৮:২৫:৪৪
সমঝোতার কথা বলে লাশ দাফনের ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও পাওনা টাকা ফেরত পায়নি ফারুক

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী কবিরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র, বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম দুলালের মৃত্যুর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তার ঋণের ৩৪ লক্ষ টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। এ ঘটনায় তৎকালীন নিহত ফখরুল ইসলাম দুলালের মরদেহ বহনকারী গাড়ির সামনে মাটিতে শুয়ে পড়েন ভুক্তভোগী ফারুক। পরে ভুক্তভোগী ফারুককে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা ও কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান।

কিন্তু কবিরহাট পৌরসভার সাবেক এ মেয়র বর্ষিয়ান বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম দুলাল এর লাশ দাফনের ৩বছর ফেরিয়ে গেলেও এখন আর কেউ দায়িত্ব নিচ্ছেনা ফারুকের ৩৪ লক্ষ টাকার। উল্টো হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছে ভুক্তভোগী ফারুক।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফখরুল ইসলাম দুলাল একজন ঠিকাদার ছিলেন। ঠিকাদারী ব্যবসা কালীন সময়ে আসামীগনের মৌরশ ফখরুল ইসলাম দুলাল এর সহিত বিভিন্ন প্রকার আর্থিক লেনদেন হয়। উক্ত আর্থিক লেনদেনের কারণে বাদী আসামীগনের মৌরশ ফখরুল ইসলাম দুলাল হইতে ৩৪, ৪৭,০০০/- টাকা পাওনা হয়। উক্ত ৩৪,৪৭,০০০/- টাকার মধ্যে ফখরুল ইসলাম দুলাল উক্ত টাকা হইতে ২১,০০,০০০/- টাকা পরিশোধের লক্ষ্যে বাদী বরাবরে বিগত ০৪/০৬/২০১৯ইং তারিখে যমুনা ব্যাংক Payable at any Branch of Jamuna Bank Limited হিসাব নম্বর ০৮২-০২১০০০৫৯১৩ হইতে ৮,০০,০০০/- (আট লক্ষ) টাকা মূল্য মানের JCA No. B3941886 নং চেক এবং একই তারিখে ইসলামী ব্যাংক লিঃ CDA Avenue Br. Chattogram-193 হিসাব নম্বর ৩৫১২ হইতে ৮,০০,০০০/- (আট লক্ষ) টাকা মূল্যের IBI 4039441 নং চেক প্রদান করে এবং বিগত ০৩/০৬/২০১৯ইং তারিখে যমুনা ব্যাংক লিঃ Payable at any Branch of Jamuna Bank Limited হিসাব নম্বর ০৮২-০২১০০০৫৯ ১৩ হইতে ৫,০০,০০০/ (পাঁচ লক্ষ) টাকা মূল্যের JCA No-B3941883 নং চেক প্রদান করেন এবং বাদী উক্ত টাকা নগদায়ন করার পূর্বে আসামীগনের মৌরশ ফখরুল ইসলাম দুলাল মৃত্যুবরণ করে। বাদী আসামীগনের মৌরশ ফখরুল ইসলাম দুলালের মৃত্যুর খবর পেয়ে মৃতের জানাজা অনুষ্ঠানে গিয়ে বাদীর পাওনা ৩৪,৪৭,০০০/- টাকা পরিশোধের কথা বলে। আসামীগন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি সাক্ষীগনের মোকাবিলায় বাদীর পাওনা টাকার কাগজপত্র ও চেক গুলো দেখে তারা বাদীর পাওনা ৩৪,৪৭,০০০/ টাকা অতি নিকটতম সময়ে পরিশোধের অঙ্গীকার করে। পরবর্তীতে আসামীগন আজ কাল করে করে বাদীকে টাকা পরিশোধ না কেির দীর্ঘকাল ক্ষেপন করতে থাকে।

ভুক্তভোগী ফারুক জানান, ফখরুল ইসলাম দুলাল চট্টগ্রামের চকরিয়ায় একটি ঠিকাদারী কাজ করা অবস্থা তার কাজের বিল পেতে দেরি হওয়ায় সাইডের লেবাররা টাকার জন্য বন্ধ করে দেয়। পরে কাজ চালানোর জন্য লেবারদেরকে টাকা দিতে তার কাছ থেকে ৩৪,৪৭,০০০ টাকা ধার নেয় দুলাল। এমতবস্থায় তার মৃত্যুর পূর্বে বিভিন্ন ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে ২১লক্ষ টাকার চেক দিলেও ব্যাংককে গিয়ে তার একাউন্টে কোন টাকা না থাকায় ব্যাংক কর্তৃক চেক ফেরত দেয়। পরবর্তীতে ফখরুল ইসলাম দুলালকে জানানেল তিনি একটু অপেক্ষা করতে বলেন। এর পর ২০১৯ সালের ৪ডিসেম্বর তিনি মারা জান। পরবর্তীতে তার মরদেহ বাড়িতে আনলে মরদেহ দাপনে বাধা দিলে কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান ও ফখরুল ইসলাম দুলালের পরিবারের সদস্যরা পরবর্তীতে বসে সমাধানের আস্বাস দিয়ে দুলালের লাশ দাপন সম্পুর্ন করেন। কিন্তু লাশ দাপনের তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখন আর কেউ দায়িত্ব নিতে রাজি নয়। শুধু তাই নয় টাকা চাইতে গিয়ে উল্টো হুমকি ধমকির শিকার হতে হচ্ছে আমাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লেনদেনের সত্যতা নিশ্চিত করে কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান জানান, ফখরুল ইসলাম দুলাল মারা যাওয়ার পর তার মরদেহ দাপনে বাধা দিলে মুসলিম হিসেবে পরিস্থিতি সামাল দিতে তখন আমি সহ তার পরিবারের সদস্যরা দায়িত্ব নিয়ে লাশ দাপনের ব্যবস্থা করি। বর্তমানে এঘটনায় আদালতে মামলা চলছে আর ওই মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। এ বিষয়ে যা বলার তা আমি পিবিআইকে বলে দিয়েছি। তবে ফারুক একজন নিরিহ লোক। সে চট্টগ্রামে ছোটখাটো চাকরি করে। সেও টাকা গুলো বিভিন্ন যায়গা থেকে ধারদেনা করে দিয়েছে। তাই আমরাও চাই ফারুক তার পাওনা টাকা গুলো পাক।

তবে এ বিষয়ে জানতে ফখরুল ইসলাম দুলালের বড় জামাতা আদাালতে চলমান মামলার ১নং আসামী আনোয়ারুল আজিম ও প্রয়াত ফখরুল ইসলাম দুলালের স্ত্রী তাসলিমা আক্তারকে তাদের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তারা কল রিসিভ করেনি।

(এস/এসপি/অক্টোবর ১৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test