E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বঙ্গবন্ধুর খুনির সম্পত্তি ক্রোকের ঘটনায় মিষ্টি বিতরণ

২০১৪ এপ্রিল ২৯ ১১:২৫:৪৮
বঙ্গবন্ধুর খুনির সম্পত্তি ক্রোকের ঘটনায় মিষ্টি বিতরণ

চাঁদপুর প্রতিনিধি : সোমবার হাজীগঞ্জের সোনাইমুড়ী গ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি লেঃ কর্নেল (বহিষ্কৃত) এএম রাশেদ চৌধুরীর দেশের বাড়ির সকল সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে।

এদিন আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে উপজেলা প্রশাসন রাশেদ চৌধুরীর ১ একর ১৫ শতাংশ সম্পত্তির উপর লাল সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয়রা আনন্দে নিজেদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করে। এর আগে উক্ত সম্পত্তি ক্রোক করার জন্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা আসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা প্রশাসন এই সম্পত্তি সনাক্ত করে।

এদিন সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনা আফরোজার নেতৃত্বে রাশেদ চৌধুরীর নিজের অংশ সর্বমোট ১ একর ১৫ শতাংশ সম্পত্তি ক্রোকী সম্পতি হিসেবে মোট ৩টি স্থানে ৩টি সাইনবোর্ড ও লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল হাছান, হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহআলম, ভূমি কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ। হাজীগঞ্জ উপজেলা কানুনগো আবুল কাশেম জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলাধীন সোনাইমুড়ী ২৪৬ মৌজার নাল, বাগান, ভিটি ও পুকুরে ১৩৬ নং খতিয়ানে ৯.২২৫০ একর সম্পত্তি রয়েছে রাশেদ চৌধুরীর বাবার মৃত শিহাব উদ্দিন চৌধুরী নামে। তারা ৯ ভাই ১ বোন। বাবার সন্তানদের মধ্যে হিস্যা অনুযায়ী রাশেদ চৌধুরীর নামে ১ একর ১৫ শতাংশ সম্পত্তি রয়েছে। এই সম্পত্তি রাশেদ চৌধুরীরর ভাইয়েরা সকলে মিলে মেপে সরকারের ক্রোকী অংশ বের করে দেয়। কানুগো আরো জানান, রাশেদ চৌধুরীর বাড়ির ৩৯৩ দাগে ১২ শতাংশ, নালা ৬৩১ দাগে ৭৫ শতাংশ ও মাঠে ১১৭২ দাগে ২৮ শতাংশ সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।

সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবু হানিফ বলেন, খুনির সম্পত্তি ক্রোক করার জন্য মাননীয় আদালত ও স্বরাষ্টমন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আমরা আরো আগেই পাই। সেই মোতাবেক আজ ঐ সম্পত্তির উপর লাল পতাকা ও সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনা আফরোজা বলেন, সরকারের আদেশ পেয়ে আমরা আরো আগে তার সম্পত্তির হিস্যা বের করার চেষ্টা করি। সর্বশেষ আমরা তার অংশ বের করতে সমর্থ হই। তাই আজ আমরা খুনি রাশেদ চৌধুরীর সম্পত্তির উপর লাল পতাকা ও সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেই। আজ থেকে এই সম্পত্তি সরকারের।

উক্ত এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আবু তালেব তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রাশেদ চৌধুরীর বাবা মরহুম শিহাব উদ্দিনের সাথে মুক্তিযুদ্ধের ইউপি সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা আঃ লতিফ মাস্টারের একটি স্কুল নিয়ে বিরোধের জের ধরে রাশেদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে ওই মাস্টারকে বাড়ি থেকে ধরে নিযে হত্যা করেন। পরে তার লাশ ফেনীর ছাগলনাইয়া ব্রিজের নিচে পাওয়া যায়। সেই হত্যকাণ্ডের আজো বিচার পায়নি তার পরিবারের সদস্যরা।

আবদুল লতিফ মাস্টারের ছেলে আহসান হাবিব জানান, শুধু সম্পত্তি ক্রোক কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। তাকে যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করে দেশে এনে রায় কার্যকর আমরা প্রত্যাশা করছি।

অপরদিকে রাশেদ চৌধুরীর চাচাতো ভাই শোয়েব আহমেদ বলেন, রাশেদ চেীধুরীর দাদা ২টি বিয়ে করেছেন। দু‘পরিবারের মোট ২০ জন সন্তান রয়েছে। তিনি দাবি করে বলেন, সম্পত্তি সুষম বন্টন হয়নি।

অপরদিকের এলাকাবাসী জাতির জনকের স্বঘোষিত খুনির ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি করেছে ও সরকারের এই ভূমিকাকে প্রশংসা করতে দেখা গেছে।

রাশেদ চৌধুরীর সম্পত্তি ক্রোক করে সাইনবোর্ড সাঁটনো হচ্ছে। পাশে এলাকাবাসী মিষ্টি বিতরণ করছে।

(এমজে/জেএ/এপ্রিল ২৯,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test