E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সুবর্ণচরে ভূমিহীনদের জায়গা দখল চেষ্টার অভিযোগ

২০২৩ ফেব্রুয়ারি ১৬ ১৯:০১:৩২
সুবর্ণচরে ভূমিহীনদের জায়গা দখল চেষ্টার অভিযোগ

মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : পৈত্তিক সম্পত্তি নদী গর্ভে বিলীনের পর সাত বোন আর তিন ভাই নিয়ে মাথা গোজার ঠাই না পেয়ে আশ্রয় নেন একসময়ে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার পর জেগে উঠা নতুন চর মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চর লক্ষী গ্রামে। নতুন চরে দশ বছর ধরে কৃষি শষ্য ফলনে চলছে তার সংসার। হঠাৎ একটি চক্র তাদের উচ্ছেদ করতে মরিয়া। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে প্রতিবেদকে এসব কথা জানাচ্ছেন মো. রাসেদ। তার মতো প্রায় ৭০টি পরিবার প্রতিবেদককে দেখে চিৎকার করে বলতে থাকেন আমাদের মাথা গোজানোর সুযোগ চাই।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ৫০-৬০ বছর আগে নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে গিয়েছিল নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরলক্ষী গ্রাম। তখন এসব জমির মালিক ছিলেন হিন্দু সস্প্রদায়ের লোকেরা। সে সুত্রে গ্রামের নামকরন হয় চর লক্ষী। নদী ভাঙনের ফলে প্রকৃত জমি মালিকরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যান। নদী ভাঙনের প্রায় ৩০ বছর পর জেগেছে নতুন চর। বসতি শুরু হয়েছে ২০ বছর ধরে। নতুন চর জেগেছে এমন খবর হয়তো জানেন না জমির মালিক কিংবা উত্তসুরীরা।

খবর নিয়ে জানা গেছে, এসব জমি কিছু ভুমি দস্যু বছর বিশেক আগে নাম মাত্র মুল্যে বিক্রি করেছে কিছু ভুমিহীন ও প্রভাবশালীদের কাছে। ফলে এসব জমি চাষাবাদ করে ভূমিহীনরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। কিন্ত হঠাৎ স্থানীয় একটি চক্র ভূমিহীনদের এসব জমি প্রকৃত মালিক না হয়েও নাম সর্বস্ব একটি পোল্ট্রি ও ফিসারিজ কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে দেয়। স্থানীয় ভূমিহীন ও জনপ্রতিনিধিদের অগোচরে কোম্পানীটি এসব জমিতে হঠাৎ ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করায় সবার মাঝে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ভূমিহীনরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করলে স্থানীয় তহসিলদার আপাতত মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেন।

স্থানীয় ভূমিহীন শামসুন নাহার, রাসেদা বেগম, লাভলী আক্তার, নুর জাহানসহ একাধিক লোকজনের সাথে কথা বলে জানিয়েছে, তাদের বসতকৃত এসব জমি ফারভেজ মেম্বার, মিন্টু মেম্বার, জাহাঙ্গীর আলম ও ফয়েজ উল্যাহসহ একটি চক্র নকল দলিল করে ঢাকার একটি কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে দেয়। ৮২ একর জমিতে প্রায় ৭০টি পরিবার এখন সঙ্কায় সময় কাটাচ্ছেন। তারা স্থানীয় ইউপি, উপজেলা, জেলা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে এ বিষয়ে।

এবিষয়ে স্থানীয় মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মহি উদ্দিন চৌধুরী জানান, ফারভেজ মেম্বার, মিন্টু মেম্বার, জাহাঙ্গীর আলম ও ফয়েজ উল্যাহসহ একটি ভূমিদস্যু চক্র নকল দলিল করে নারিশ এগ্রো’র কাছে বিক্রি করাটা সম্পুর্ন বেআইনি। জমির প্রকৃত মালিক তারা নন। এবষিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ঠ সুবর্ণচর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অশোক বিক্রম চাকমাকে ও জেলায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। তাদের নিদের্শে ভূমি দখল বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে এ ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের কথাও জানিয়েছেন এ ইউপি চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চরবাটা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার পারভেজ বলেন, আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই এবং আমি সে জায়গাও চিনিনা, সড়যন্ত্র করে কেউ আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্যেশে কোন একটি কুচক্রি মহলের ইন্ধনে আমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে আমি এর তিব্র নিন্ধা জানাই । চরক্লার্ক ইউনিয়নের মেম্বার মিন্টু বলেন, আমার ৭ একর জায়গা রয়েছে আমি সন্ধীপের মানুষের কাছ থেকে কিনেছে, তার কাছে জমির প্রকৃত কাগজপত্র ও মুল দলিলাদি রয়েছে। তারা সম্পুর্ণ বৈধভাবে জমি বিক্রি করেছেন, তবে কবে কখন কার কাছ থেকে কিনেছেন তা তিনি জানান নি, নারিশ এগ্রো ফিডের সংশ্লিষ্ট কোন কর্মকর্তার সাথে নানা ভাবে যোগাযোগ করলেও তাদের কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন এছাড়াও নারিশের কোন সাইন বোর্ড কিংবা প্রকৃত নারিশ কতৃপক্ষ এতে জড়িত কিনা এ বিষয়ে কোন প্রমানাধি মেলেনি।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test